পাতা:মারাঠা জাতীয় বিকাশ.pdf/৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

________________

মারাঠা জাতীয় বিকাশ অর্ধ শতাব্দীরও কম সময় স্থায়ী ছিল। অপর পক্ষে, মারাঠা শক্তি দিল্লীশ্বরের সঙ্গে দীর্ঘকাল যুঝিয়া অবশেষে দিল্লীতে রাজার উপর রাজা হইয়া বসে ; এই শক্তির প্রভাব সমস্ত ভারতকে আচ্ছন্ন করে ; আর মারাঠা স্বাধীন রাজত্ব ১৬৬৭ হইতে ১৮১৭ পর্যন্ত ১৫০ বৎসর ব্যাপিয়া জীবিত ছিল। বিশ্বনাথ কাশীনাথ রাসবাড়ে সত্যই গর্ব করিয়াছেন “মারাঠারা তাহাদের বিজয়দুন্দুভি আটক হইতে কুমারিকা পর্যন্ত বাঙ্গাইয়াছিল।” ভারতের অন্তিম উত্তর-পূর্বে বঙ্গ, দক্ষিণ-পশ্চিমে গােয়া পর্যন্ত মারাঠা-শক্তির তেজ অনুভব করিয়াছিল। তাহা ভিন্ন, আর একটা পার্থক্য আছে। শিখসংগঠন একটি ধর্মসম্প্রদায়ের মাত্র কাজ, মারাঠা রাষ্ট্র একটি জাতি বা নেশনের সৃষ্টি, ইহা সর্ব ধর্মের, সর্ব জাতের অর্থাৎ বর্ণের মিলনের ফল। আর রাষ্ট্রনীতি-শাস্ত্রের দিক দিয়া দেখিলে মারাঠী শাসন-পদ্ধতি ও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান শিখদের সৃষ্টি অপেক্ষা অনেক উচ্চ দরের ও অধিক কর্মক্ষম। ফলত শিখেরা যােদ্ধামাত্র ছিল, শাসনকর্তা নহে, কিন্তু মারাঠারা এ উভয় ক্ষেত্রেই অসামান্য কৃতিত্ব দেখাইয়াছে। কিন্তু যদিও মারাঠাদের উদয় মুঘল সাম্রাজ্যের অবনতির শেষ যুগে মাত্র ঘটিয়াছিল, তথাপি উহারা অখ্যাত নগণ্য নবীন ভূইফোড় জাতি নহে। এই জাতির পরিমাময় অতীত ইতিহাস ছিল। সম্ভবত অশােক এবং খরবেলের শিলালেখের রাটি জাতি এই মহারাষ্ট্র-বাসিগণ। তাহার পরবর্তী যুগে রাষ্ট্রকূট রাজগণ নিজেদের বিখ্যাত রাজ্য স্থাপন করিয়া উত্তর-ভারত পর্যন্ত অগ্রসর হইয়াছিলেন। তাহারও পরে, যাদব বংশ মহারাষ্ট্র দেশ ব্যাপিয়া শেষ হিন্দুরাজ্য স্থাপন করেন, এবং এই বংশ মুসলমান আক্রমণে নষ্ট হইলেও, ইহার অনেক শাখা নানা স্থানে জমিদারের মত বহুদিন পর্যন্ত টিকিয়া থাকিয়া পূর্বপুরুষদের গৌরব-স্মৃতি