পাতা:মিবাররাজ.djvu/৬৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ষোড়শ পরিচ্ছেদ।
৬১

যখন রক্তাক্তদেহ, নীরব, দৃষ্টিহীন, অজ্ঞান পিতাকে ভূপতিত দেখিতে পাইল, তখন সমস্ত বিশ্বসংসার তাহার চতুর্দ্দিকে প্রচণ্ডবেগে যেন ঘুরিয়া উঠিল। সেই ঘূর্ণাপাকের মধ্যস্থলে দাঁড়াইয়া একটা জীবন্ত পাষাণ মূর্ত্তি— সবলে মর্ম্মে মর্ম্মে আলোড়িত বিদারিত হইতে লাগিল, তাহার জ্ঞান আছে অথচ সে অজ্ঞান, তাহার জীবন আছে, অথচ সে মৃত, তাহার অনুভবের ক্ষমতা আছে—অথচ সে বলহীন পাষাণের ন্যায় যন্ত্রণাকাতর হইয়া কাঁদিয়া বিদীর্ণ কণ্ঠে “বাবাডারে” বলিয়া ডাকিয়া অজ্ঞান মন্দালিকের গলা জড়াইয়া ধরিল—সে কাতরতায় আকাশ পাতাল নেন বিচলিত হইয়া পড়িল—কিন্তু মন্দালিক কেমন অবিচলিত, যেমন নিস্তব্ধ, তেমনি রহিলেন, পুত্র আজ কাঁদিয়া কাঁদিয়া ডাকিয়া ডাকিয়া পিতার ঘুম ভাঙ্গাইতে পারিল না! তিনি আজ অনন্ত নিদ্রায় নিদ্রিত। সহসা মন্দালিকের নিকটস্থ ভূমিন্যস্ততীর শোকোন্মত্ত পুত্রের চক্ষে পড়িল,—সে তীর তাহারি তীর—আপনার হাতে আপনার পিতাকে সে তবে বধ করিয়াছে! আর সে পারিল না, তাহার দীর্ণ বিদীর্ণ হৃদয়ভূমি সবেগউথিত আগ্নেয় বিপ্লবে চূর্ণ বিচূর্ণ খণ্ড বিখণ্ড হইয়া দূর দূরান্তরে যেন ছুটিয়া পড়িতে লাগিল—অনন্ত যাতনাভরে সে উঠিয়া দাঁড়াইল, অনন্ত যাতনায় উন্মাদ হইয়া দ্রুতবেগে ছুটিয়া পাহাড়-শিখর হইতে নিম্নে ঝাঁপাইয়া পড়িল। সহসা নিম্নোত্থিত মৃদু কোলাহলে এক—