পাতা:মিবার-গৌরব-কথা - হেমলতা দেবী.pdf/৬৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৫৮
মিবার-গৌরব-কথা।

মিলিল। অভূতপূর্ব্বভাবে, কৃতজ্ঞতা ও আনন্দে তাঁহার হৃদয় উচ্ছ্বসিত হইল। তাঁহার মুখে একটিও বাক্য সরিল না। তিনি ভ্রাতাকে উঠাইয়া হৃদয়ে চাপিয়া ধরিলেন। আর অবিরল অশ্রুধারায় তাঁহার বক্ষঃস্থল ভাসিয়া যাইতে লাগিল। সেই নির্জ্জন গিরিদেশে সন্ধ্যার অন্ধকারে ভ্রাতায় ভ্রাতায় মিলন হইল। দুই বীর পরস্পরকে বাহুপাশে বাঁধিয়া কেবল কাঁদিলেন। আবার হরিষে বিষাদ! প্রতাপের প্রিয় অশ্ব চৈতক প্রভুর পদতলে পড়িয়া তাঁহার মুখের দিকে চাহিয়া প্রাণ বিসর্জ্জন করিল।[১] প্রতাপ বলিয়া উঠিলেন,—“চৈতকরে! এতদিন পরে আজ শত্রুর হস্ত হইতে আমাকে উদ্ধার করিয়া, ভ্রাতার হস্তে নিরাপদে রাখিয়া অবসর বুঝিয়া তুই বিদায় লইলি।” চৈতকের দুঃখে তাঁহার চক্ষু দিয়া আবার নীরবে অশ্রুধারা পড়িতে লাগিল।

 শক্ত বলিলেন —“দাদা! আপনি আমার অশ্বটী গ্রহণ করুন।

 প্রতাপ। এই রাত্রে বনের ভিতর দিয়া তুমি কিরূপে ফিরিবে?


  1. যেখানে চৈতকের মৃত্যু হয় তাহার উপর প্রতাপ এক সমাধি নির্ম্মাণ করেন। আজও লোকে তাহাকে “চৈতক্‌কা চবুত্রা” বলে।