পাতা:মিষ্টান্ন-পাক.djvu/১৮২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
নবম পরিচ্ছেদ।
১৬৯

থাকে। খাদ্য-দ্রব্য-মাত্রে-ই স্বাস্থ্যের অনুকূল কি না, তদ্বিষয়ে দৃষ্টি রাখিয়া প্রস্তুত করা উচিত।

 সকল প্রকার দ্রব্য সকল ঋতুতে উৎপন্ন হয় না। ঋতু-বিশেষে বিশেষ বিশেষ ফল মূল উৎপন্ন হইয়া থাকে। এজন্য যে ঋতুতে যে সকল ফল মূল জন্মিয়া থাকে, সেই ঋতুতে তদ্দ্বারা মোরব্বা পাক করিতে হয়।

 ভাল ভাল উপকরণ দ্বারা পাক করিয়া-ও, কেবলমাত্র রাখার দোষে অনেক সময় মোরব্বা নষ্ট হইতে দেখা যায়। গৃহস্থগণের অমনোযোগিতা-ই যে, ঐরূপ বিকৃত হইবার একমাত্র কারণ, তাহা কে-না স্বীকার করিবেন? অর্থব্যয়, পরিশ্রম এবং যত্ন দ্বারা যাহা প্রস্তুত করিতে হয়, সামান্যমাত্র রাখার দোষে, যদি নষ্ট হইয়া যায়, তবে তাহা যে, অত্যন্ত লজ্জার বিষয়, ইহা বলা বাহুল্য। বিশেষতঃ, কোন কোন মোরব্বা ও আচার প্রভৃতি রোগীদিগের-ও খাদ্যে ব্যবহৃত হইয়া থাকে। দুষিত খাদ্য আহারে সুস্থ ব্যক্তির পর্য্যন্ত যখন স্বাস্থ্য-ভঙ্গ হইবার কথা, অসুস্থ রোগাক্রান্ত ব্যক্তির পক্ষে উহা যে, কতদূর অপকারী, তাহা কোন্ বুদ্ধিমান্ ব্যক্তি বুঝিতে না পারেন।

 অতি প্রাচীন কাল হইতে-ই এ দেশে খাদ্য সম্বন্ধে নানা প্রকার উন্নতির পরিচয় পাওয়া যায়। কি নিরামিষ, কি আমিষ, মিষ্টান্ন এবং কি মোরব্বা ও আচার সকল প্রকার পাক-কার্য্যে ভারতে শ্রীবৃদ্ধি সাধিত হইয়াছিল। দুঃখের বিষয় এক্ষণে তাহাতে অবহেলা বৃদ্ধি হইতেছে।

 অন্যান্য রন্ধন অপেক্ষা মোরব্বা এবং আচার-পাক অতি সহজ। এরূপ সহজ পাকে যে, কুললক্ষ্মীরা অপেক্ষাকৃত যত্নবতী হইবেন, তাহাতে আর সন্দেহ নাই। পূর্ব্বে উল্লেখ করা হইয়াছে, আচার ও মোরব্বা প্রস্তুত করিতে হইলে, ভাল রকম ফল মূলাদি সংগ্রহ করিতে হয়। তজ্জন্য ফল বিষয়ে জ্ঞান লাভ করা আবশ্যক।