পাতা:মিষ্টান্ন-পাক.djvu/২৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৪
মিষ্টান্ন-পাক।

করে, এই জন্য উহা অপেয়। প্রথম প্রসূতা গাভী, ছাগী প্রভৃতির দুধ গুণ-হীন এবং অসার; মধ্যম বয়সের দুধ-ই তেজস্কর, বৃদ্ধ বয়সের দুধ দুর্ব্বল। প্রসূতা গাভীর তিন মাস পরে, যে দুধ হয়, তাহা-ই অতি প্রশস্ত।

 দুধ জ্বালে একবার উথলিয়া উঠিলে, তাহাকে এক বলকের দুধ কহে। দুর্ব্বল রোগীর পক্ষে এইরূপ দুধ খাদ্যে ব্যবস্থা, কারণ উহা গুরু-পাক নহে। দুধ জ্বালে যে পরিমাণ ঘন করা যায়, সেই পরিমাণে গুরু-পাক হইয়া উঠে।

 দুধ দ্বারা ক্ষীর, সর, মাখন প্রভৃতি অতি উপাদেয় খাদ্য-দ্রব্য-সমূহ প্রস্তুত হইয়া থাকে। নির্জ্জলা অর্থাৎ খাঁটি দুধ-ই উৎকৃষ্ট।

দুগ্ধের গুণাগুণ।

 গো, মহিষ, ছাগ, মেষ এবং গর্দভ প্রভৃতি প্রাণী সকলের দুগ্ধ মনুষ্যদিগের পানীয়। প্রাণি-ভেদানুসারে বিভিন্ন দুগ্ধের বিভিন্ন গুণ। সাধারণতঃ, সকল প্রকার দুগ্ধ-ই প্রাণধারণের উপযোগী, বল-কারক, আয়ুবর্দ্ধক, পুষ্টি-কর, শুক্র-জনক, অগ্নি-বর্দ্ধক, মেধা-স্মৃতি প্রভৃতির বৃদ্ধিকারক, নিদ্রা-কর, স্রোতঃ-শোধক এবং দোষ-নাশক। সকল প্রাণীর-ই দুগ্ধ সদ্যঃ-প্রসবের পরে ও প্রসবের বহুকাল পরে-ও নানা-দোষ-জনক হইয়া থাকে; এজন্য মধ্য-প্রসূতার দুগ্ধ-ই অত্যন্ত উপকারক। গর্ভিণীর দুগ্ধ-ও রস-গুণ প্রভৃতিতে নিতান্ত বিকৃত হইয়া থাকে; সুতরাং তাহা-ও পরিত্যাজ্য।

 অপক্ক দুগ্ধ গুরু-পাক আর শ্বাস-কাস প্রভৃতি রোগের উৎপাদক। এজন্য সকল দুগ্ধ-ই পক্ক অর্থাৎ জ্বাল দেওয়া প্রশস্ত। কিন্তু কেবলমাত্র নারী-দুগ্ধ-ই অপক্ক অবস্থাতে রোগ-নাশক এবং পানের উপযুক্ত।