বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:মিষ্টান্ন-পাক.djvu/৫৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪২
মিষ্টান্ন-পাক।

ক্ষীর-আম।

 ক্ষীর-আম অতি উপাদেয় মুখ-রোচক পরিত্র খাদ্য। কাঁচা আমের রসে ইহা প্রস্তুত হইয়া থাকে বলিয়া ইহার নাম ক্ষীর-আম। দুই প্রকার নিয়মে এই খাদ্য প্রস্তুত হইয়া থাকে। ক্ষীরের জন্য নির্জ্জলা দুগ্ধ-ই প্রশস্ত। দুধে জল থাকিলে, উহার আস্বাদন পান্‌সা হয়। প্রথমতঃ, কাঁচা আমের খোসা ছাড়াইয়া, তাহা উত্তমরূপে ধুইয়া লইবে। পরে, পরিষ্কার শিলে ছেঁচিয়া রস বাহির করিয়া, একটি পাত্রে রাখিবে। এস্থলে একটি কথা মনে রাখা আবশ্যক, সকল আমের একরূপ অম্লত্ব থাকে না; এ জন্য প্রতি সের দুধে কি পরিমাণ রস দিতে হয়, তাহা অনুমান দ্বারা ঠিক করিয়া লওয়া উচিত ৷

 দুধে অম্ল রস সংযোগ হইলে, উহা বিকৃত অর্থাৎ কাটিয়া বা ছিঁড়িয়া যায়, তাহা সকলেই অবগত আছেন। কিন্তু ক্ষীর-আমে দুধ আদৌ বিকৃত হয় না। যে নিয়মে আম্র-রস মিশাইলে, দুধ বিকৃতব হয় না, তাহা জানা আবশ্যক। আম্র-রস মিশাইবার সময় উহা খুব নাড়িতে অর্থাৎ হাতা করিয়া ফেটাইতে থাকিবে, এবং সেই অবস্থার ক্রমে ক্রমে অল্প পরিমাণে আমের রস ও চিনি মিশাইয়া, উহা জ্বালে চড়াইবে। আম্র-রস ও চিনি এমন নিয়মে মিশাইতে হইবে; তাহার যেন মধুরান্ন আস্বাদন হয়। অনন্তর, জ্বালে উহা গাঢ় অর্থাৎ কাটির গায়ে কামড়াইয়া ধরিতে আরম্ভ হইলে, নামাইয়া লইবে।

 দ্বিতীয় প্রণালী।—অগ্রে ক্ষীর প্রস্তুত করিয়া, সেই ক্ষীরে পূর্ব্বোক্ত নিয়মে আম্র-রস ও চিনি মিশাইয়া লইলে-ই; ক্ষীর-আম প্রস্তুত হইবে। কেহ কেহ আবার উহাতে ছোট এলাচদানা-চূর্ণ ও কর্পূর দিয়া থাকেন। রুচি অনুসারে দুই এক বিন্দু গোলাপী আতর-ও ব্যবহৃত হইয়া থাকে।