কিছুক্ষণ উনানের উপর ঐরূপ জ্বাল পাইলে, তাহা হইতে ফেনা অর্থাৎ গাদ উঠিতে থাকিবে। এই সময় দুগ্ধ-মিশ্রিত জল ঐ গাদের চারিধারে ও উপরে দিতে হইবে, এবং মধ্যে মধ্যে গাদ কাটিয়া অন্য পাত্রে তুলিয়া রাখিতে হইবে। পূর্ব্বে যেরূপ জ্বাল দেওয়া হইতেছিল, গাদ তুলিবার পরে, সেরূপ জ্বাল না দিয়া, মৃদু জ্বাল দিতে হইবে। যখন দেখিবে, সমুদায় গাদ তুলিয়া লওয়া হইয়াছে, এবং ঈষৎ লালবর্ণ ফুট উঠিতেছে, তখন তাহা নামাইয়া বস্ত্র দ্বারা ছাঁকিতে হইবে। অনন্তর, ঐ রস অন্য একটি পাত্রে করিয়া, পুনর্ব্বার মৃদু জ্বালে উনানে বসাইতে হইবে, এবং কিছুক্ষণ জ্বাল পাইলে, যখন উহা তাড়, অথবা হাতা দ্বারা নাড়িলে আঠার মত লাগিয়া এক ধারা পড়িবে, তখন তাহাকে “একতারবন্দের রস” কহে। এইরূপ উহা আবার অপেক্ষাকত ঘন হইয়া, দুই ধারা পড়িলে, তাহাকে “দুই তার বন্দের রস কহে। পুনর্ব্বার কিঞ্চিৎ ঘন হইয়া, রস শুক্লবর্ণের হইলে, এবং আঙুলে ঐ রস ঘর্ষণ করিলে, রোয়া বোধ হইলে, তাহাকে “তিন তার বন্দ রস" কহে। তিন তার বন্দ রস হইতে কিঞ্চিৎ ঘন হইলে, তাহাকে “সাড়ে তিন তার বন্দ রস” কহিয়া থাকে। রস প্রস্তুত করিতে প্রথমে যে গাদ তুলিয়া রাখা হয়, ফেলিয়া না দিয়া, ঐ গাদ পুনর্ব্বার জ্বালে চড়াইয়া, প্রথম বারের ন্যায় দুগ্ধ মিশ্রিত জল দিয়া, পূর্ব্বের মত গাদ কাটিয়া রস বাহির করিয়া লওয়া যায়। কিন্তু এই রস তত পরিষ্কৃত হয় না। আর এই গাদে চিনির অংশ এত অল্প থাকে যে, তদ্দ্বারা অতি সামান্য রস হইয়া থাকে, এবং তাহা অত্যন্ত ময়লা, এজন্য উহা ব্যবহার করা আবশ্যক বোধ হয় না। তবে এই গাদ বৃক্ষাদির সার ও গরুর খাদ্যে ব্যবহৃত হইয়া থাকে।
পাতা:মিষ্টান্ন-পাক.djvu/৬৭
অবয়ব
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৫৪
মিষ্টান্ন পাক।