পাতা:মীরকাসিম - অক্ষয়কুমার মৈত্রেয়.pdf/১০৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

স্বাদশ পরিচ্ছেদ କଳ যুদ্ধে জয়লাভ করিয়াও, দিল্লীশ্বর তাহার ফলভোগ করিতে পারিলেন না। মনসুর আলি রণপরাজিত হইয়া জাঠি-রাজ্যে পলায়ন করিলেন। ইনতিমাদ্দৌলা উজীর-পদে অভিষিক্ত হইলেন। মনসুর আলির রাজবিদ্রোহের দণ্ড দান করা দূরে থাকুক, ঘটনাচক্রে বাধ্য হইয়া, তাহাকে ক্ষমা প্রদর্শন করিতে হইল। ইহাতে গৃহকলহ শান্ত না হইয়া পূর্বাপেক্ষা প্ৰবল হইয়া উঠিল। মনসুর আলির অনুগ্রহেই গাজি উদ্দীন মীর-বক্সী হইয়াছিলেন। তিনিই মনসুর আলিকে ক্ষমা করিতে অসম্মতি প্ৰকাশ করিয়া, জাঠি-রাজ্য আক্রমণ করিলেন। প্ৰধান অমাত্য ইহাতে উত্যক্ত হইয়া মীর বক্সীকে কামান ও গোলা বারুদ প্রেরণ করিতে নিরস্ত হইলেন। মীর বক্সী এইরূপ ব্যবহারে অবমাননা প্ৰাপ্ত হইয়া মহারাষ্ট্র সেনার সহায়তা গ্ৰহণ করিলেন । এক বিদ্রোহীকে শাস্তি প্ৰদানের জন্য অন্য বিদ্রোহীর আশ্রয় গ্ৰহণ করিতে গিয়া দিল্লীশ্বরের প্রধান সেনাপতি যে মোগলের শাসন-ক্ষমতা চুৰ্ণ করিতেছিলেন, সে কথা বিচার করিবার সময় হইল না । মহারাষ্ট্র সেনানায়ক মলহর রাও সসৈন্যে গাজি উদ্দীনের সহিত মিলিত হইলেন । বাদশাহ এবং উজীর সাহেব সসৈন্যে যুদ্ধযাত্ৰা করিলেন । এই যুদ্ধে মোগলের সর্বনাশ হইল। বাদশাহ দিল্লীদুর্গে অবরুদ্ধ হইলেন। বিজয়োম্মত্ত গাজিউদ্দীন তাহাকে সিংহাসনচ্যুত করিয়া আজিমুদ্দীন নামক তৈমুরবংশীয় কোন রাজকুমারকে সিংহাসনে সংস্থাপিত করিলেন। আহম্মদ শাহের চক্ষুদ্বয় উৎপাটিত হইল । ১৭৫৫ খৃষ্টাব্দের নভেম্বর মাস হইতে দিল্লীশ্বর আত্মভূত্যের গোলাম সাজিয়া সিংহাসনে উপবেশন করিলেন। গাজি উদ্দীনের কৃপায় সিংহাসন লাভ করিলেও তঁহার মত অকৃতজ্ঞ নিরাধমের কথায় বাদশাহ আস্থা স্থাপন করিতে পারিলেন না । তিনি পাকে-চক্ৰে গাজি উদ্দীনকে পদচ্যুত করিবার উপায় অন্বেষণ করিতে লাগিলেন ।