পাতা:মীরকাসিম - অক্ষয়কুমার মৈত্রেয়.pdf/১২৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১১৪ মীর কাসিম একদল বলিয়াই গণ্য হইত। সমরক্ষেত্রে বহুসংখ্যক সেন সমবেত হইয়া একমাত্ৰ নায়কের ইঙ্গিতামাত্রে পরিচালিত হইত। এই সকল কারণেই মোগল-সেনা পরাভূত হইত, মীর কাসিম তাহা পুন: পুনঃ লক্ষ্য করিয়াছিলেন। তিনি এই সকল অসুবিধা দূর করিয়া ইংরাজসেনার ন্যায় মোগলসেনার সংস্কার সাধনে অগ্রসর হইলেন। ইহার জন্য তঁহাকে অস্ত্রশস্ত্ৰ নিৰ্ম্মাণ ও সেনাদিগের সমর কৌশল শিক্ষার ব্যবস্থা করিতে হইল। মুঙ্গের দুর্গ এই অভিনব শিক্ষার কেন্দ্ৰ স্থান হইয়া উঠিল। শিক্ষকের অভাব হইল না । সংকল্প সাধনে মীর কাসিমের একাগ্ৰতা ছিল । তিনি অনন্য কৰ্ম্ম হইয়া সংকল্প সাধনের আয়োজন করিতে লাগিলেন । অস্ত্রশস্ত্ৰ নিৰ্ম্মাণ করিবার জন্য যন্ত্রশালা নিৰ্ম্মিত হইল। তখন ইউরোপীয় শিক্ষকের উপদেশে এদেশের লোকে শীঘ্রই কামান বন্দুক প্ৰস্তুত করিবার উৎকৃষ্ট কৌশল শিক্ষা করিল। সেকালে কামানে অগ্নি-সংযোগ করিতে হইত ; বন্দুক ছুড়িতে হইলে চকমকি পাথর দিয়া অগ্ন্যুৎপাদন করিতে হইত। বন্দুকের নাল তাপসহ করিতে হইলে উৎকৃষ্ট লৌহের প্রয়োজন হইত। রাজমহলের চকমকি এবং ছোট নাগপুরের লৌহ শীঘ্রই বিখ্যাত হইয়া উঠিল। এই সকল বন্দুক লইয়া উত্তরকালে ইংরাজেরা পরীক্ষা করিয়া দেখিয়াছিলেন, —কোম্পানীর বন্দুক অপেক্ষা মীর কাসিমের বন্দুক সর্বাংশেই উৎকৃষ্ট হইয়াছিল । কামানগুলি পিত্তল গলাইয়া ঢালাই করিবার প্রথা প্ৰবৰ্ত্তিত করিয়া মীর কাসিম এক নূতন কীৰ্ত্তি সংস্থাপিত করিয়াছিলেন। ইংরাজদিগকে প্ৰতারিত করিয়া কোন কোন স্বাধীন ইউরোপীয় বণিক এদেশে বন্দুক কামান ও গুলি-গোলার আমদানী করিতেন। মীর কাসিমের অস্ত্রাগারে তাহাও সংগৃহীত হইতে লাগিল। এইরূপে মীর কাসিম যে সকল অস্ত্রশস্ত্ৰ সংগ্ৰহ করিয়াছিলেন, সেকালের