পাতা:মুক্তি-পথে - গোপীপদ চট্টোপাধ্যায়.pdf/৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।



মুক্তি-পথে

 প্রকাশ—সত্যিই ত বাঙ্গালী আজ যতটুকু বড় হয়েছে, সে ত তোমাদের মত ঐ বাব্‌রিওয়ালা কবিদেরই কৃপায়!

“বাঙ্গালী আজি গানের রাজা
বাঙ্গালী নহে খর্ব্ব”

 সরোজ—ভুলে যাচ্ছ প্রকাশ, তুমি সেই প্রাচীনের আদর্শ সেই তপোবনের আদর্শ। ভারতের মুক্তি হয়েছিল একদিন; কিন্তু সে গানে নয়—দর্শন,—দর্শনই ভারতকে মুক্ত করেছিল। আবার মনে রাখবে,— ভারত আবার কোন দিন যদি স্বাধীন হয়, তবে সে দর্শনেরই জন্যে হবে। এ বিষয়ে বিন্দুমাত্রও সন্দেহ নেই।

 দিলীপ—মূল ছেড়ে আগা ধরে টানলে কিছুই হবে না, সরোজ ভায়া! মুক্তির আদিমন্ত্র নৃত্য আর গীত। এর বাস্তবকে তুলিয়ে এক সুদূর কল্পনা-রাজ্যে নিয়ে যেতে পারে। মানুষ তা বুঝতে পেরেছে। ঐ দেখ, তাই আজ নৃত্য-গীত-মুখরা সুন্দরী কলিকাতা নগরী শত শত রস-পিপাসুকে নিত্য নূতন রসের পরিবেশন করছে। আর মুক্তিকামী লক্ষ লক্ষ নর-নারী সেই রস আকণ্ঠ পান করে কৃতার্থ হচ্ছে।

“ধরণীর শ্যাম করপুট খানি
ভরি দিব আমি সেই গীত আনি,
বাতাসে মিশায়ে দিব এক বাণী,
মধুর অর্থ ভরা।”


 প্রকাশ—থাম, থাম! ক্ষেত্রবিশেষে পাগলামি করা চলে, সব জায়গায় নয়। কবির ন্যাকামি আর দার্শনিকের ভণ্ডামির জ্বালায় দেশ অস্থির।