পাতা:মুর্শিদাবাদ কাহিনী.djvu/১০৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
মোতিঝিল
১০৩

মহম্মদ খাঁ তাহাতে বিশ্বাস না করিয়া স্বহস্তে পুনর্বার খানা পাঠাইয়া দেন; খানা সে বারও যূঁইফুলের মালা হইল। তখন তিনি অত্যন্ত বিস্ময়ান্বিত হইলেন। তদবধি তিনি গোস্বামীকে অতিশয় শ্রদ্ধা করিতেন। এক সময়ে গোস্বামীদিগের অনুরোধে তিনি এরূপ আদেশ দিয়াছিলেন যে, মন্দিরের নিকটস্থ চারিটি ঘাটের সীমার মধ্যে কেহ মৎস্য বা পক্ষী বধ করিতে পারবে না।[১] এইরূপ অনেক প্রবাদে ও গল্পে মোতিঝিলের উভয়তীরস্থ ভূমি পরিপূর্ণ। বহুদিনের প্রাচীন স্থান হইলে, এইরূপে তাহা হইতে অনেক গল্পের সৃষ্টি হইয়া থাকে।

 আমরা মোতিঝিলের প্রবাদমূলক ও ঐতিহাসিক বিবরণ যতদূর সংগ্রহ করিতে পারিয়াছি, সাধারণের নিকট প্রকাশ করিলাম। মুসলমানরাজত্বের সমাধিক্ষেত্র মুর্শিদাবাদে ভ্রমণ করিলে, এখনও তাহার অতীত গৌরবের অনেক বিবরণ অবগত হওয়া যায়। যদিও কালের কঠোর হস্তে ইহার প্রায় সমস্ত গৌরব-চিহ্নই ধরণীপৃষ্ঠ হইতে মুছিয়া গিয়াছে, তথাপি যাহা কিছু ভগ্নাবশেষ আছে, তাহার মধ্যে দাঁড়াইয়া চারিদিকে দৃষ্টিপাত করিলে, অতীতের অনেক মনোমোহিনী ছবি মানসচক্ষের সম্মুখে আসিয়া উপস্থিত হয়। আমরা মুসলমান-গৌরবের সমাধিক্ষেত্রে ভ্রমণ করিয়া গুরুভারাকান্ত-হৃদয়ে গৃহে প্রত্যাগত হই। অবশেষে ইংরেজরাজত্বের গৌরবপ্রবাহের মধ্যে আত্মবিসর্জন দিয়া গুরুভারের লাঘব করিয়া থাকি।

    তাঁহারই নাম নির্দেশ করিলাম। কেহ কেহ এই খানা প্রেরণসম্বন্ধে অন্যান্য নবাবদের নাম করিয়া থাকেন।

  1. উক্ত আদেশপত্র অনেক দিন পর্যন্ত গোস্বামীদের নিকট ছিল; এক্ষণে তাঁহাদের নিকট নাই। তাহা দেখিলে কাহার দত্ত আদেশপত্র বেশ বুঝা যাইত। কিন্তু এক্ষণে তাহার কোন উপায় নাই।