পাতা:মুর্শিদাবাদ কাহিনী.djvu/২৫১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
মহারাজ নন্দকুমার
২৪৫


ভ্রাতার আদেশানুযায়ী যে একখানি পর তাহার ভ্রাতার মোহরসংযুক্ত করিয়া রূপনারায়ণ চৌধুরীকে লেখা হয়, সে পত্র আদালতে উপস্থিত হইলে, তেজরায় তাহ নিজের লিখিত ও ভ্রাতার মোহরযুক্ত স্বীকার করে। সে ও তাহার ভ্রাতা, সাহেবরায়ের পুত্র ও বঙ্গুলালের পৌত্র; তাহার ভ্রাতা বর্ধমান চাকলার ধনেখালির নিকট বড়াই আদমপুর নামক গ্রামে মাতামহালয়ে জন্মগ্রহণ করে। তাহার পিতামহ হুগলীতে বাস করিতেন; কিন্তু বর্ধমানের মানকরে তাহার কারবার ছিল। মাতাবরায়ের সহিত হাজারীমল ও কাশীনাথের পরিচয় ছিল বলায়, তেজরায়ের সাক্ষ্য শেষ হইতে না হইতে, হাজারীমল ও কাশীনাথ বাবু নামে দুইজন সাক্ষীকে উপস্থিত করা হয়। এই সাক্ষিদ্বয়কে কোন পক্ষ হইতে আহবান করা হইয়াছিল, তাহার প্রমাণ পাওয়া যায় না। কিন্তু কেহ কেহ ইহাকে আদালতের মানিত সাক্ষী বলিয়া অনুমান করিয়া থাকেন।৩৫ হাজারীমল হেস্টিংস-স্থাপিত কুঠীর একজন অংশীদার এবং কাশীনাথ হেস্টিংসের বন্ধু রসেল সাহেবের বেনিয়ান ছিল।

 হাজারীমল প্রথমতঃ কোন মাতাবরায়কে দেখিয়াছে কিনা বলিতে চাহে না; পরে বলে যে, একজনকে দেখিয়াছে, কিন্তু তাহার সহিত তেজরায়ের সাক্ষ্যানুযায়ী তাহার ভ্রাতার বয়সের মিল হয় না; অনেক বৎসরের পার্থক্য হয়।

 কাশীনাথ বলে যে, সে যে মাতাবরায়কে চিনিত, সে তেজরায়ের ভ্রাতা নহে, বঙ্গুলালের পুত্র। তেজরায়কে সম্মুখে উপস্থিত করিলেও সে তেজরায়কে সাহেবরায়ের পুত্র বলিয়া চিনিতে পারে নাই। পরে বলে যে, আমি আর একজন বঙ্গুলালকে চিনিতাম, তাহার হুগলীতে বাস ছিল এবং সে মানকরে কাজ করিত।

 বর্ধমানের রানীর পেস্কার রূপনারায়ণ চৌধুরী সাক্ষ্য দেন যে, তিনি তেজরায় ও মাতাবরায় দুই ভ্রাতাকে চিনিতেন এবং তাহাদিগকে সাহেবরায়ের পুত্র বলিয়াই জানেন, মাতাবরায়ের মোহরযুক্ত এক পত্রেরও প্রাপ্তি স্বীকার করেন।

 রূপনারায়ণের পর জয়দেব চোবেকে সাক্ষীর হলে উপস্থাপিত করা হয়। জয়দেব চোবে বলে যে, আমি জানি বুলাকীদাসের আদেশে তাহার মুহুরী মহারাজ নন্দকুমারকে অঙ্গীকার-পত্র লিখিয়া দেয়। মাতাবরায় নামে এক ক্ষত্রিয়, মহম্মদ কমল ও বুলাকীদাসের উকীল শীলাবৎ সাক্ষী হয়। অঙ্গীকার-পত্রে টাকার কথা ৪o হাজার হইতে ৪৫ হাজারের মধ্যে লেখা হয় বলিয়া মনে হইতেছে। আর একবার বলে যে, ৪o হইতে ৫o হাজারের মধ্যে লিখিত হয়। কমলউদ্দীন খা ঁমহম্মদ কমল কিনা জিজ্ঞাসা করিলে, সে উত্তর দেয় যে, কমলউদ্দীন মহম্মদ কমল নহে; মহম্মদ কমল ৫৬ বৎসর হইল প্রাণত্যাগ করিয়াছে। সে মহারাজের বাটীর এক পার্শ্বে থাকত, তথায় তাহার মৃত্যু হয়। আমি তাহার মৃতদেহ বহন করিয়া কবর দিতে লইয়া যাইতে দেখিয়াছি। মাতাবরায় ক্ষত্রিয়কেও সে জানিত বলিয়া স্বীকার

 ৩৫ Beveridge.