পাতা:মুর্শিদাবাদ কাহিনী.djvu/২৬৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
২৫৮
মুর্শিদাবাদ-কাহিনী
২৫৮

૨૬૪ মুর্শিদাবাদ-কাহিনী রাজনৈতিক জগতের ন্যায় সামাজিক জগতেও মহারাজের শত্রুর অভাব ছিল না । কেহ কেহ তাহার ঈর্ষা প্রকাশ করিয়া ব্ৰাহ্মণগণের আদর অনাদর সম্বন্ধে গ্রাম্য কবিতাও রচনা করিয়া গিয়াছে কিন্তু মহারাজ যে ব্রাহ্মণগণের প্রতি যথেষ্ট সমাদর করিয়াছিলেন, তাহদের পদধূলিসংগ্রহ করা তাহার জলন্ত প্রমাণ । মহারাজ নন্দকুমার সেই লক্ষ ব্রাহ্মণের পদধূলি গ্রহণ করিয়া, অতীব যত্নপূর্বক রক্ষা করিয়াছিলেন। অদ্যাপি সে ধূলির কতক অংশ কুঞ্জঘাট রাজবাটতে অবস্থিতি করিতেছে । যিনি ব্রাহ্মণের পদধূলির জন্য লালায়িত, তাহার কর্তৃক নিমন্ত্রিত ব্রাহ্মণের অনাদর যে সম্পূর্ণ অসম্ভব, ইহাতে কিছুমাত্র সন্দেহ নাই। তবে এক স্থানে লক্ষ ব্রাহ্মণের সমাবেশ হইলে, সকলের প্রতি সমান যত্ন সম্ভব হইয়া উঠা অতি কঠিন । কিন্তু মহারাজ সেই লক্ষ ব্রাহ্মণের পদধূলি লইবার জন্য র্তাহাদিগকে বিশেষ সমাদরই করিয়াছিলেন। লক্ষ ব্রাহ্মণকে ভোজন করাইবার জন্য যে-সমস্ত কাষ্ঠাসন বা পিঁড়া নিমিত হইয়াছিল, তাহারও ২৪ খানি কুঞ্জঘাট বাজবাটীতে অদ্যাপি দেখিতে পাওয়া যায়। কুঞ্জঘাটা-রাজবংশীয়েরা সেই পদধূলি ও পিঁড় কয়খানিকে যৎপরোনাস্তি মান্য করিয়া থাকেন । লক্ষ ব্রাহ্মণ যে তোরণদ্বার দিয়া মহারাজের বাটতে প্রবেশ করিয়াছিলেন, তাহা আজও বিদ্যমান রহিয়াছে । মহারাজের দেবভক্তিও অতুলনীয় ছিল । তিনি ভদ্রপুরে নবরত্বের এক মন্দির স্থাপন করিয়া, তাহাতে লক্ষীনারায়ণের বিগ্রহ প্রতিষ্ঠা করিয়াছিলেন । বৃন্দাবনচন্দ্র নামে আর এক বিগ্রহও প্রতিষ্ঠিত হন । নবরত্বের মন্দিরে অনেক শিল্পকার্য করা হইয়াছিল । এক্ষণে তাহার ভগ্নাবশেষ দৃষ্ট হইয়া থাকে। এতদ্ভিন্ন শিব, আকালীপুর নামক স্থানে গুহাকালী, গৌরীশঙ্কর প্রতিমাদ্বয়ের প্রতিষ্ঠা করিয়া তিনি আপনার সাম্প্রদায়িকতাবিহীন প্রকৃত সনাতন ধর্মনিষ্ঠার পরিচয় প্রদান করিয়া গিয়াছেন । গুহাকালীর মন্দির অদ্যপি বর্তমান আছে ।** লক্ষীনারায়ণ, বৃন্দাবনচন্দ্র রাজা ৪৭ সেই কবিতার কয়েক চরণ উদ্ধৃত হইতেছে — “ভাদুরের নন্দকুমার, লক্ষ বামন কল্পে সুমার, কেউ খেলে মাছের মুড়ো, কেউ খেলে বন্দুকের হুড়ো ;–ইত্যাদি। ভদ্রপুরকে সাধারণ লোকে ভাদুর বলিয়া থাকে । ৪৮ আকালীপুরের মন্দিরে প্রতিমাস্থাপনের জন্য মহারাজ গুরুদাসকে যে পত্র লিখিয়াছিলেন, আদ্যাপি তাহা কুঞ্জঘাটার রাজবাটীতে বিদ্যমান আছে। আমরা পরিশিষ্টে উক্ত পত্র প্রদান করিলাম। তাহা হইতে অনেক রাজনৈতিক তথ্যও অবগত হওয়া যায়। রটন্তী তিথিতে উত্ত প্রতিমাদ্বয় প্রতিষ্ঠিত হন। সেইজন্য আজিও রটন্তী তিথিতে ধূমধামের সহিত প্রতিমাদ্বয়ের পূজা হইয় থাকে। আকালীপুরের মন্দির অসম্পূর্ণ অবস্থায় বিদ্যমান রহিয়াছে। মন্দির মধ্যে গুহাকালী ও গৌরীশঙ্কর মৃতি অবস্থিত। গুহ্যকালীর এমন সুন্দর মূতি আর কুত্ৰাপি দৃষ্ট