পাতা:মুর্শিদাবাদ কাহিনী.djvu/৩০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
২৪
মুর্শিদাবাদ-কাহিনী

বেড়টি ১ হাতের উপর। অগ্নিসংযোগ-ছিদ্রের ব্যাস ১॥ ইঞ্চি হইবে। কামানের গাত্রে ফারসী ভাষায় খোদিত ৯ খণ্ড পিত্তলফলক আছে। ৩ খণ্ড অশ্বত্থবৃক্ষের কাণ্ড মধ্যে প্রবিষ্ট, অবশিষ্ট কয়েকখানিও অস্পষ্ট হইয়া পড়িয়াছে। পিত্তলফলকে বাঙ্গলার শাসনকর্তা ইসলাম খাঁর গুণবর্ণনা ও কামানের নির্মাণাব্দাদি খোদিত আছে। এইরূপ লিখিত আছে যে, এই জাহানকোষা সাজাহানের রাজত্বকালে ও ইসলাম খাঁর বাঙ্গলাশাসনের সময়, জাহাঙ্গীরনগরে দারোগা শের মহম্মদের অধীন হরবল্লভ দাসের তত্ত্বাবধানে জনাৰ্দন[১] কর্মকার কর্তৃক ১০৪৭ হিঃ ১১ই জমাদিয়স্ সানি মাসে নির্মিত হয়। ইহা ওজনে ২১২ মণ; ইহাতে ২৮ সের বারুদ লাগিয়া থাকে। জাহানকোষাকে এক্ষণে হিন্দু-মুসলমান উভয় জাতিই সিন্দুরাদি লেপন করিয়া পূজা করিয়া থাকে। ঢাকায় ইহা অপেক্ষা আরও একটি বিশাল তোপ ছিল; তাহা এক্ষণে নদীগর্ভে পতিত। বিষ্ণুপুর প্রভৃতি স্থানেও বৃহৎ তোপের কথা শুনা গিয়া থাকে।[২] আমাদের দেশে পূর্বে যেরূপ শিল্পের উন্নতি হইয়াছিল, অনুসন্ধান করিলে, এখনও তাহার অনেক চিহ্ন দেখিতে পাওয়া যায়। বাঙ্গলার শিল্পের দিন দিন যেরূপ অবনতি হইতেছে, তাহাতে লোকে ইহার পূর্বশিল্পের কথা প্রবাদ বাক্য বলিয়া মনে করিবে।

  1. এই জনাৰ্দনকে বেভারিজ প্রভৃতি জর্নাজন বলিয়া লিখিয়াছেন। পিত্তল-ফলকের লেখা এক্ষণে অস্পষ্ট হইয়াছে, ভাল করিয়া পড়িবার সুবিধা নাই; কিন্তু উহা জনাৰ্দন হওয়াই সম্ভব।
  2. Vide History of Bishnupur.