পাতা:মুর্শিদাবাদ কাহিনী.djvu/৩৭২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
৩৬৬
মুর্শিদাবাদ-কাহিনী

পরে তাহার উদ্ধারসাধন করে।[১] ইহা কেবল কাহিনীমাত্র, বিশেষ কোন প্রমাণ না থাকায় বিশ্বাস করা যায় না।

 মুসলমানগণ বলিয়া থাকেন যে, জ্ঞানী খেজেরের উদ্দেশেই এই পর্বের অনুষ্ঠান। খেজের জীবন-নিঝর [২] আবিষ্কার করিয়া নিজেই তাহা পান করায় অমরতা লাভ করেন। সেইজন্য তাহার ‘চিরযৌবনাবস্থা’ হইতে তাহার নাম খেজের [৩] হইয়াছে।

 খেজেরের বিবরণ মুসলমানশাস্ত্রে এইরূপ লিখিত আছে। একদিন মূসা ধর্মপ্রচার করিতেছিলেন। লোকে তাহার প্রচারে সন্তুষ্ট হইয়া জিজ্ঞাসা করে যে, তাহার অপেক্ষা জ্ঞানী ব্যক্তি জগতে আছে কি না? তাহাতে মূসা, কেহ নাই বলিয়া উত্তর করেন। এই সময়ে ঈশ্বর তাহাকে প্রত্যাদেশ অবগত করান যে, আল খেজের তাহা অপেক্ষা জ্ঞানী। যেখানে দুই সমুদ্রের মিলন হইয়াছে, সেই খানের কোন পর্বতে তাহার স্থান। যেখানে মূসার পাত্র হইতে একটি মৎস্য জলে পতিত হইবে, সেই খানে খেজেরের সাক্ষাৎলাভ হইবে। মুসার অনুচর জসুয়া জীবন-নিঝরে মৎস্য ধৌত করিতে গেলে মৎস্য জলে পড়িয়া যায়। মূসা তাহা জানিতে পারিয়া, সেইখানেই খেজেরের সাক্ষাৎ লাভ করেন।[৪] জীবন-নিঝরের প্রভু বলিয়া মুসলমানগণ খেজেরের উদ্দেশে এই উৎসব করিয়া থাকেন।

 খেজেরকে মুসলমানেরা ফিনিয়াস, ইলয়াস ও সেজর্জ বলিয়া অনেক সময়ে গোলযোগ করেন।[৫] তাঁহারা বলেন যে, খেজেরের আত্মা ক্রমান্বয়ে উক্ত তিন জনের দেহমধ্যে প্রবিষ্ট হয়। কেহ কেহ [৬] বলিয়া থাকেন যে, তাহার প্রকৃত নাম বাল্য আবু মলকান। তিনি পারস্যের প্রাচীন রাজা আফ্রিদুনের সময় আবির্ভূত হন।[৭] সাধারণতঃ খেজেরকে ইলয়াস বলিয়া নির্দেশ করা যায়।[৮] খেজের যেরূপে জীবন-নিঝর পান করিয়াছিলেন বলিয়া কথিত, ইয়াসও সেইরূপ ঈশ্বরের আদেশে চেরিখ নামক নদী পান করিয়াছিলেন বলিয়া বাইবেলে লিখিত আছে।[৯]

  1. Travels of a Hindoo, Vol. I, p. 82.
  2. Fountain of Life.
  3. Khaja Khizir literally means Green Lord.
  4. Moses. য়িহুদিদিগের বিধানকর্তা।
  5. Sale's Al Koran, pp. 222-223.
  6. Professor Garcin de Sassy ইহাই বলেন। Hunter’s Statistical Account of Bengal, Vol. IX, p. 70. Also Sale's Al Koran, p. 223. ফিনিয়াস মূসার ভ্রাতা হারুণের পুত্র। সেন্টজর্জ ইংলণ্ডের রক্ষক বলিয়া কথিত।
  7. Sale's Koran, p. 223.
  8. Smith's Dictionary of the Bible, p. 532.
  9. “And it shall be that thou shalt drink of the brook” (old Testament I Kings XVII. 4-7)