পাতা:মুর্শিদাবাদ কাহিনী.djvu/৪৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
৩৮
মুর্শিদাবাদ-কাহিনী

 ১৭৪৪ খ্রীঃ অব্দে ফতেচাঁদের মৃত্যু হয়। ফতেচাঁদের আনন্দচাদ দয়াচাঁদ ও মহাচাঁদ নামে তিন পুত্র জন্মে। আনন্দচাঁদ ও দয়াচাঁদ, পিতার জীবদ্দশাতেই পরলোকগমন করায়, পৌত্র মহাতপচাদ ও স্বরূপচাদকে ফতেচাদ উত্তরাধিকারী মনোনীত করিয়া যান। মহাতপচাদ আনন্দর্চাদের ও স্বরূপচাঁদ দয়ার্টাদের পুত্র। বাদশাহের নিকট হইতে মহাতপচাদ “জগৎশেঠ” ও স্বরূপচাঁদ “মহারাজ” উপাধি লাভ করেন। এই সময়ে শেঠদিগের উন্নতি চরমসীমায় উপনীত হয়। তাঁহাদের ঐশ্বর্যের সীমা ছিল না। শেঠদিগের গদীতে অনবরত ১o কোটি টাকার কারবার চলিত। জমিদার মহাজন ও অন্যান্য ব্যবসায়ী সকলেই অর্থের জন্য শেঠদিগের নিকট উপস্থিত হইতেন। ইংরেজ, ফরাসী প্রভৃতি বৈদেশিক বণিকগণ তাঁহাদের নিকট হইতে টাকা কর্জ লইতেন। ফতেচাদের মৃত্যুর পর নবাব আলিবর্দী খা ঁজগৎশেঠ মহাতপচাদকে যথেষ্ট সমাদর করিতেন, এবং ফতেচাদের ন্যায় তাহারও পরামর্শ গ্রহণ করিতে লুটি করিতেন না। এই সময় হইতে শেঠদিগের সহিত ইংরেজদের সম্বন্ধ প্রগাঢ় হইতে আরম্ভ হয়। ১৭৪৯ খ্রী: অব্দে ইংরেজগণ কতকগুলি আর্মেনীয় বণিকের প্রতি অযথা অত্যাচার করায়, নবাব ইংরেজদিগকে দমন করার জন্য কতকগুলি সৈন্য প্রেরণ করিয়াছিলেন। তাহারা কাশীমবাজার কুঠী অবরোধ করিলে, ইংরেজরা নবাবের নিকট ক্ষমাপ্রার্থনা করেন। নবাব তাহাদিগের ১২ লক্ষ টাকা জরিমানা করায়, ইংরেজরা শেঠদিগের নিকট হইতে উক্ত টাকা লইয়া নবাবের ক্লোধ শান্ত করিতে বাধ্য হন।১২ ডিরেক্টরগণ অনেকদিন হইতে কলিকাতায় একটি স্বতন্ত্র টাঁকশাল নির্মাণের জন্য তথাকার অধ্যক্ষকে বারংবার লিখিয়া পাঠাইতেছিলেন। উক্ত টাঁকশাল স্থাপনের জন্য যত টাকা ব্যয়ের আবশ্যক, তাহ প্রদান করিতে তাঁহারা সম্মত ছিলেন। ১৭৫৩ খ্রীঃ অব্দে কলিকাতার তদানীন্তন অধ্যক্ষ তাহার এইরূপ উত্তর দেন যে, “এ কার্য অতি গোপনভাবে সম্পন্ন করাই কর্তব্য। নবাবের নিকট অনুমতি প্রার্থনা করিলে, তিনি এ বিষয়ে জগৎশেঠদিগের মতামত জিজ্ঞাসা করিবেন। আমরা যতই কেন অর্থ ব্যয় করি না, জগৎশেঠ কিছুতেই সম্মতি প্রদান করিবেন না। মুদ্র নির্মাণের জন্য যে-সমস্ত সোনারূপার আমদানি হয়, তৎসমস্তই জগৎশেঠগণ একাকী ক্রয় করিয়া থাকেন এবং তজন্য তাঁহাদের যথেষ্ট লাভও হয়। এ প্রস্তাবে তাহাদের লাভের ব্যত্যয় ঘটিবার সম্ভাবনা; সুতরাং তাহারা স্বীকৃত হইবেন বলিয়া বোধ হয় না। তবে তাহাদের অজ্ঞাতসারে যদি দিল্লীর দরবার হইতে অনুমতি লওয়া যায়, তাহা হইলে কিয়ৎ

- - - - - -

mentioning it without seeming to exaggerate, and to deal in extravagant fables. Thousands of their agents and factors have acquired such fortunes in their service, as have enabled them to purchase large tracts of land, and other astonishing possessions.” (Seir Mutaqherin. Trans. Vol. II, pp. 226-227.)

 ১২ Long's Selection of Unpublished Records, Vol. I, p. 19.