পাতা:মৃণালিনী - বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/১১৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আর একটি সম্বাদ।
১১১

 এই বলিয়া হেমচন্দ্র গৃহমধ্যে পুনঃ প্রবেশ করিলেন।

 হেমচন্দ্র যে কেন গিরিজায়াকে বলিলেন, তোমার সম্বাদ শুভ তাহা গিরিজায়া বুঝিল না। যে ক্রোধভরে, হেমচন্দ্র, এই মৃণালিনীর জন্য গুরুদেবের প্রতি শরসন্ধানে উদ্যত হইয়ছিলেন, সেই দুর্জ্জয় ক্রোধ হৃদয়মধ্যে সমুদিত হইল। অভিমানাধিক্যে, দুর্দ্দম ক্রোধাবেগে, হেমচন্দ্র গিরিজায়াকে বলিলেন, “তোমার সম্বাদ শুভ।”

 গিরিজায়া তাহা বুঝিতে পারিল না। মনে করিল, এই ষষ্ঠ লক্ষণ। কেহ তাহাকে ভিক্ষা দিল না; সেও ভিক্ষার প্রতীক্ষা করিল না; “শিকলী কাটিয়াছে” সিদ্ধান্ত করিয়া গৃহাভিমুখে চলিল।


পঞ্চম পরিচ্ছেদ।


আর একটি সম্বাদ।

 সেই দিন মাধবাচার্য্যের পর্যটন সমাপ্ত হইল। তিনি নবদ্বীপে উপস্থিত হইলেন। তথায় প্রিয়শিষ্য হেমচন্দ্রকে দর্শন দান করিয়া চরিতার্থ করিলেন। এবং আশীর্ব্বাদ আলিঙ্গন কুশল প্রশ্নাদির পরে, বিরলে উভয়ের উদ্দেশ্য সম্বন্ধে কথোপকথন করিতে লাগিলেন।

 আপন ভ্রমণবৃত্তান্ত সবিস্তারে বিবরিত করিয়া মাধবাচার্য্য কহিলেন; “এত শ্রম করিয়া কতকদূর কৃতকার্য্য হইয়াছি। এতদ্দেশের অধীন রাজগণের মধ্যে অনেকেই রণক্ষেত্রে সসৈন্যে সেনরাজার সহায়তা করিতে স্বীকৃত হইয়াছেন। অচিরাৎ সকলে আসিয়া নবদ্বীপে সমবেত হইবেন।”

ঝ২