পাতা:মৃণালিনী - বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/১৪৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

চতুর্থ খণ্ড।


প্রথম পরিচ্ছেদ।

ঊর্ণনাভ।

 যতক্ষণ মৃণালিনীর সুখের তারা ডুবিতেছিল, ততক্ষণ বঙ্গদেশের সৌভাগ্য শশীও সেই পথে যাইতেছিল। যে ব্যক্তি রাখিলে, বঙ্গ রাখিতে পারিত, সেই ঊর্ণনাভের ন্যায় বিরলে বসিয়া অভাগা জন্মভূমিকে বন্ধ করিবার জন্য জাল পাতিতে ছিল। নিশীথ সময়ে নিভৃতে বসিয়া ধর্ম্মাধিকার পশুপতি, নিজ দক্ষিণ হস্তস্বরূপ শান্তশীলকে ভর্ৎসনা করিতেছিলেন। “শান্তশীল! প্রাতে যে সম্বাদ দিয়াছ, তাহা ত কেবল তোমার অপারগতার পরিচয় মাত্র। তোমার প্রতি আর কোন ভার দিবার ইচ্ছা নাই।”

 শান্তশীল কহিল, “যাহা অসাধ্য তাহা পারি নাই। অন্য কার্য্যের পরিচয় গ্রহণ করুন।”

 প। “সৈনিকদিগকে কি উপদেশ দেওয়া হইতেছে?”

 শা। “এই যে, আমাদিগের আজ্ঞা না পাইলে কেহ সজ্জিত না হয়।”

 প। “প্রান্তপাল ও কোষ্ঠপাল দিগকে কি উপদেশ দেওয়া হইয়াছে?”

 শা। “এই বলিয়া দিয়াছি যে অচিরাৎ যবন সম্রাটের নিকট হইতে কর লইয়া কতিপয় যবন দূত স্বরূপ আসিতেছে। তাহাদিগের গতিরোধ না করে।”