পাতা:মৃণালিনী - বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/১৪৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিনা সূতার হার।
১৪৩

‘মহারাজ! ইহার সদুপায় এই যে, অবসর থাকিতে থাকিতে আপনি সপরিবারে তীর্থযাত্রা করুন। ধর্ম্মাধিকারের প্রতি রাজকার্য্যের ভার দিয়া যাউন। তাহা হইলে আপনার শরীর রক্ষা হইবে। পরে শাস্ত্র মিথ্যা হয় রাজ্য পুনঃপ্রাপ্ত হইবেন।’ রাজা এ পরামর্শে সন্তুষ্ট হইয়া নৌকা সজ্জা করিতে আদেশ করিয়াছেন। অচিরাৎ সপরিবারে পুরুষোত্তমে যাত্রা করিবেন।”

 প। “দামোদর সাধু। তুমিও সাধু। এক্ষণে আমার মনস্কামনা সিদ্ধির সম্ভাবনা দেখিতেছি। নিতান্ত পক্ষে, স্বাধীন রাজা না হই, যবনরাজ প্রতিনিধি হইব। কার্য্য সিদ্ধ হইলে তোমাদিগকে সাধ্যমত পুরস্কৃত করিতে ত্রুটি করিব না। তাহা ত জান। এক্ষণে বিদায় হও। কল্য প্রাতেই যেন তীর্থ যাত্রা জন্য নৌকা প্রস্তুত থাকে।”

 শান্তশীল বিদায় হইল।


দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ।


বিনা সূতার হার।

 পশুপতি উচ্চ-অট্টালিকায় বহু ভৃত্য সমভিব্যাহারে বাস করিতেন বটে, কিন্তু তাঁহার পুরী কানন হইতে অন্ধকার। গৃহ যাহাতে আলো হয়, স্ত্রী পুত্র পরিবার—এ সকলই তাঁহার গৃহে ছিল না।

 অদ্য শান্তশীলের সহিত কথোপকথনের পর পশুপতির সেই সকল কথা মনে পড়িল। মনে ভাবিলেন, “এত কালের