রের গলায় পরাইতে ছিলেন—পশুপতির কথা কর্ণে গেল না। মার্জ্জার মালা পরিধানে বিশেষ অনিচ্ছা প্রকাশ করিতেছিল— যত বার মনোরমা মালা তাহার গলায় দিতে ছিলেন, তত বার সে মালার ভিতর হইতে মস্তক বাহির করিয়া লইতেছিল— মনোরমা কুন্দনিন্দিত দন্তে অধর দংশন করিয়া ঈষৎ হাসিতে ছিলেন আর আবার মালা তাহার গলায় দিতে ছিলেন। পশুপতি অধিকতর বিরক্ত হইয়া বিড়ালকে এক চপেটাঘাত করিলেন—বিড়াল উর্দ্ধলাঙ্গূল হইয়া দূরে পলায়ন করিল। মনোরমা সেইরূপ দংশিতাধরে হাসিতে হাসিতে করস্থ মালা—পশুপতিরই মস্তকে পরাইয়া দিলেন।
মার্জ্জার প্রসাদ মস্তকে পাইয়া রাজপ্রসাদভোগী ধর্ম্মাধিকার হতবুদ্ধি হইয়া রহিলেন। অল্প ক্রোধ হইল—কিন্তু দংশিতাধরা হাস্যময়ীর তৎকালে অনুপম রূপমাধুরী দেখিয়া তাঁহার মস্তক ঘূরিয়া গেল। তিনি মনোরমাকে আলিঙ্গন করিবার জন্য বাহু প্রসারণ করিলেন—অমনি মনোরমা লম্ফ দিয়া দূরে দাঁড়াইল—পথিমধ্যে উন্নতফণা কালসর্প দেখিয়া পথিক যেমন দূরে দাঁড়ায় সেইরূপ দাঁড়াইল।
পশুপতি অপ্রতিভ হইলেন; ক্ষণেক মনোরমার মুখ প্রতি চাহিতে পারিলেন না—পরে চাহিয়া দেখিলেন—মনোরমা প্রৌঢ়বয়সী মহিমাময়ী সুন্দরী।
পশুপতি কহিলেন, “মনোরমে, দোষ ভাবিও না। তুমি আমার পত্নী—আমাকে বিবাহ কর।” মনোরমা পশুপতির মুখপ্রতি তীব্র কটাক্ষ করিয়া কহিলেন,
“পশুপতি! কেশবের কন্যা কোথায়?”
পশুপতি কহিলেন, “কেশবের কন্যা কোথায় জানি না—জানিতেও চাহি না। তুমি আমার একমাত্র পত্নী।”
ড২