পাতা:মৃণালিনী - বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/১৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আচার্য্য।
১৩

 কুত। “তোমরা পশ্চাদ্বর্ত্তী হইলে না কেন?”

 রক্ষি। “আমরা অশ্ব আনিতে আনিতে সে দৃষ্টিপথের অতীত হইল।”

 কুত। “তীর মারিলে না কেন?”

 রক্ষি। “মারিয়াছিলাম। তাহার কবচে ঠেকিয়া তীর সকল মাটিতে পড়িল।”

 কুত। “যে যবন অশ্ব লইয়া ফিরাইতেছিল সে কোথা?”

 রক্ষি। “প্রথমে আমরা বন্দীর প্রতিই মনোনিবেশ করিয়াছিলাম। পশ্চাৎ অশ্বপালের সন্ধান করায় তাহাকে দেখিতে পাইলাম না।”


তৃতীয় পরিচ্ছেদ।

আচার্য্য।

 ইহার কিছু দিন পরে, একদিন প্রয়াগতীর্থে, গঙ্গা যমুনা সঙ্গমে, অপূর্ব্ব প্রাবৃট্‌দিনান্তশোভা প্রকটিত হইতেছিল। প্রাবৃট্‌কাল, কিন্তু মেঘ নাই, অথবা যে মেঘ আছে, তাহা স্বর্ণময় তরঙ্গমালাবৎ পশ্চিম গগনে বিরাজ করিতেছিল। সূর্য্যদেব অস্তে গমন করিয়াছিলেন। বর্ষার জলসঞ্চারে গঙ্গা যমুনা উভয়েই সম্পূর্ণশরীরা, যৌবনের পরিপূর্ণতায় উন্মাদিনী যেন দুই ভগিনী ক্রীড়াচ্ছলে পরস্পরে আলিঙ্গন করিতেছিল। চঞ্চল বসনাগ্রভাগবৎ তরঙ্গমালা পবনতাড়িত হইয়া কূলে প্রতিঘাত করিতেছিল। বর্ষাকালে সেই গঙ্গা যমুনা সঙ্গমের জলময় শোভা যে না দেখিল তাহার বৃথায় চক্ষুঃ।

 একখানি ক্ষুদ্রতরণীতে দুই জন মাত্র নাবিক। তরণী অস-