গিরিজায়া বলিল “তোর সঙ্গে আমার সঙ্গে কোন্ পুরুষে আলাপ রে মিন্সে!”
দিগ্বিজয় দেখিল নিস্তার নাই—রণে ভঙ্গ দেওয়াই পরামর্শ। দিগ্বিজয় তখন অনুপায় দেখিয়া, উর্দ্ধশ্বাসে গৃহ হইতে পলায়ন করিল। গিরিজায়া সম্মার্জ্জনী হস্তে তাহার পশ্চাৎ পশ্চাৎ ধাবিত হইল।
একাদশ পরিচ্ছেদ।
পূর্ব্ব পরিচয়।
প্রভাতে হেমচন্দ্র মাধবাচার্য্যের অনুসন্ধানে যাত্রা করিলেন। গিরিজায়া আসিয়া মৃণালিনীর নিকট বসিল।
গিরিজায়া মৃণালিনীর দুঃখের ভাগিনী হইয়াছিল, সহৃদয় হইয়া দুঃখের সময়ে দুঃখের কাহিনী সকল শুনিয়াছিল। আজি সুখের দিনে সে কেন সুখের ভাগিনী না হইবে? আজি সেইরূপ সহৃদয়তার সহিত সুখের কথাকেন না শুনিবে? গিরিজায়া ভিখারিণী—মৃণালিনী মহাধনীর কন্যা—উভয়ে এতদূর সামাজিক প্রভেদ। কিন্তু দুঃখের দিনে গিরিজায়া মৃণালিনীর একমাত্র সুহৃৎ, সে সময়ে ভিখারিণী আর রাজপুরবধূতে প্রভেদ থাকে না; আজি সেই বলে গিরিজায়া মৃণালিনীর হৃদয়ের সুখের অংশাধিকারিণী হইল।
যে আলাপ হইতেছিল তাহাতে গিরিজায় বিস্মিত ও প্রীত হইতেছিল। মৃণালিনীকে জিজ্ঞাসা করিল।—“তা এত দিন এমন কথা প্রকাশ কর নাই কি জন্য?”