পাতা:মৃণালিনী - বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/১৮০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পূর্ব্ব পরিচয়।
১৭৭

 গি। “মাধবাচার্য্য জানেন না?”

 মৃ। “না। তিনি জানিলে সর্ব্বনাশ হইত। মগধরাজ তাহাহইলে অবশ্য শুনিতেন। আমার পিতা বৌদ্ধ, মগধরাজ গুরুতর বৌদ্ধবিদ্বেষী।”

 গি। “ভাল তোমার পিতা যদি তোমাকে এপর্য্যন্ত কুমারী বলিয়া জানিতেন, তবে এত বয়সেও তোমার বিবাহ দেন নাই কেন?”

 মৃ। “পিতার দোষ নাই। তিনি অনেক যত্ন করিয়াছেন। কিন্তু বৌদ্ধ সুপাত্র পাওয়া সুকঠিন; কেন না বৌদ্ধধর্ম্ম প্রায় লোপ হইয়াছে। পিতা বৌদ্ধ জামাতা চাহেন অথচ সুপাত্রও চাহেন। এরূপ একটি পাওয়া গিয়াছিল, সে আমার বিবাহের পর। বিবাহের দিনস্থির হইয়া সকল উদ্যোগও হইয়াছিল। কিন্তু আমি সেই সময়ে জ্বর করিয়া বসিলাম। পাত্র অন্যত্র বিবাহ করিল।”

 গি। “ইচ্ছাপূর্ব্বক জ্বর করিয়াছিলে?”

 মৃ। “হাঁ ইচ্ছাপূর্ব্বক। আমাদিগের উদ্যানে একটা কূপ আছে তাহার জল কেহ স্পর্শ করে না। তাহার পানে বা স্নানে নিশ্চিত জ্বর। আমি রাত্রে গোপনে সেই জলে স্নান করিয়াছিলাম।”

 গি। “পুনশ্চ সম্বন্ধ হইলে, সেই রূপ করিতে?”

 মৃ। “সন্দেহ কি? নচেৎ হেমচন্দ্রের নিকট পলাইয়া যাইতাম।”

 গি। “মথুরা হইতে মগধ এক মাসের পথ। স্ত্রীলোক হইয়া কাহার সহায়ে পলাইতে?”

 মৃ। “আমার সহিত সাক্ষাতের জন্য হেমচন্দ্র মথুরায় এক বাণিজ্যাগার স্থাপন করিয়া আপনি তথায় রত্নদাস বণিক্ বলিয়া”