সপ্তম পরিচ্ছেদ।
লুব্ধ।
মৃণালিনী বা গিরিজায়া এতন্মধ্যে কেহই আত্মপ্রতিশ্রুত বিস্মৃতা হইলেন না। উভয়ে প্রহরেক রাত্রে হৃষীকেশের গৃহপার্শ্বে সংমিলিত হইলেন। মৃণালিনী গিরিজায়াকে দেখিবামাত্র কহিলেন,
“কই, হেমচন্দ্র কোথায়?
গিরিজায়া কহিল “তিনি আইসেন নাই।”
“আইসেন নাই!” এই কথাটী মৃণালিনীর অন্তস্তল হইতে ধ্বনিত হইল। ক্ষণেক উভয়ে নীরব। তৎপরে মৃণালিনী, জিজ্ঞাসা করিলেন, “কেন আসিলেন না?”
গি। “তাহা আমি জানি না। এই পত্র দিয়াছেন।” এই বলিয়া গিরিজায়া তাঁহার হস্তে লিপি দান করিল। মৃণালিনী কহিলেন, “কি প্রকারে বা লিপি পাঠ করি? গৃহে গিয়া প্রদীপ জ্বলিয়া পাঠ করিলে মণিমালিনী জাগরিতা হইয়া দেখিতে পাইবে—হা বিধাত!”
গিরিজায়া কহিল “অধীর হইও না। আমি প্রদীপ, তৈল, পাতর, লোহা, সকলই আনিয়া রাখিয়াছি। এখনই আলো করিতেছি।”
গিরিজায়া শীঘ্র হস্তে অগ্ন্যুৎপাদন করিয়া প্রদীপ জ্বালিত করিল। অগ্ন্যুৎপাদন শব্দ এক জন গৃহবাসীর কর্ণে প্রবেশ করিল—দীপালোক সে দেখিতে পাইল।
গিরিজায়া দীপ জ্বালিত করিলে মৃণালিনী নিম্নলিখিত মত মনে মনে পাঠ করিলেন।