পাতা:মৃণালিনী - বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৯৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৯২
মৃণালিনী।

নাই। আপনি যোদ্ধা এবং যবনদ্বেষী দেখিতেছি। যদি ইচ্ছা থাকে তবে আমার সঙ্গে আসুন—উভয়ে চোরকে ধৃত করিব।”

 হেমচন্দ্র সম্মত হইয়া শান্তশীলের সঙ্গে চলিলেন। শান্তশীল সিংহদ্বার দিয়া পশুপতির গৃহে হেমচন্দ্রকে লইয়া প্রবেশ করিলেন। এবং এক কক্ষমধ্যে প্রবেশ করিয়া কহিলেন, “এই গৃহমধ্যে আমার সুবর্ণ রত্নাদি সকল আছে আপনি ইহার প্রহরায় অবস্থিতি করুন। আমি ততক্ষণ সন্ধান করিয়া আসি কোন্ স্থানে যবন লুক্কায়িত আছে।”

 এই কথা বলিয়াই শান্তশীল সেই কক্ষ হইতে নিষ্ক্রান্ত হইলেন। এবং হেমচন্দ্র কোন উত্তর দিতে না দিতেই বাহির দিকে কক্ষ দ্বার রুদ্ধ করিলেন। হেমচন্দ্র ফাঁদে পড়িয়া বন্দী হইয়া রহিলেন।


একাদশ পরিচ্ছেদ।


মুক্ত।

 মনোরমা পশুপতির নিকট বিদায় হইয়াই দ্রুতপদে চিত্রগৃহে আসিলেন। পশুপতির সহিত শান্তশীলের কথোপকথন সময়ে শুনিয়াছিলেন যে ঐ ঘরে হেমচন্দ্র রুদ্ধ হইয়াছিলেন। আসিয়াই চিত্রগৃহের দ্বারেন্মোচন করিলেন। হেমচন্দ্রকে কহিলেন, “হেমচন্দ্র, বাহির হইয়া যাও।”

 হেমচন্দ্র গৃহের বাহিরে আসিলেন। মনোরমা তাহার সঙ্গে সঙ্গে আসিলেন তখন হেমচন্দ্র মনোরমাকে জিজ্ঞাসা করিলেন।

 “আমি রুদ্ধ হইয়াছিলাম কেন?”

 ম। “তাহা পশ্চাৎ বলিব।”