পাতা:মৃণালিনী - বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৯৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৯৪
মৃণালিনী।

 ম। “যুদ্ধ করিবে না তবে দেখিয়া কি হইবে?”

 হে। “দেখিলে জানিতে পারিব কি উপায়ে তাহারা বিনষ্ট হইবে।”

 মনোরমা চমকিয়া উঠিলেন। কহিলেন, “বিংশতি সহস্র মানুষ মারিবে? কি সর্ব্বনাশ! ছি! ছি!”

 হে। “মনোরমে, তুমি এ সকল সম্বাদ কোথায় পাইলে?”

 ম। আরও সম্বাদ আছে। আজি রাত্রে তোমারে মারিবার জন্য তোমার গৃহে দস্যু আসিবে। আজি গৃহে যাইও না।” বলিয়া মনোরমা উর্দ্ধশ্বাসে পলায়ন করিল।


দ্বাদশ পরিচ্ছেদ।


অতিথিসৎকার।

 হেমচন্দ্র গৃহে প্রত্যাগমন করিয়া এক সুন্দর অশ্ব সজ্জিত করিয়া তদুপরি আরোহণ করিলেন। এবং অশ্বে কষাঘাত করিয়া মহাবনাভিমুখে যাত্রা করিলেন। নগর পার হইলেন; তৎপরে প্রান্তর। প্রান্তরেরও কিয়দংশ পার হইলেন, এমত সময়ে অকস্মাৎ স্কন্ধদেশে গুরুতর বেদনা পাইলেন। দেখিলেন, স্কন্ধে একটা তীর বিদ্ধ হইয়াছে। পশ্চাতে অশ্বের পদধ্বনি শ্রুত হইল। ফিরিয়া দেখিলেন, তিনজন অশ্বারোহী আসিতেছে।

 হেমচন্দ্র ঘোটকের মুখ ফিরাইয়া তাহাদিগের প্রতীক্ষা করিতে লাগিলেন। ফিরিবামাত্র দেখিলেন, প্রত্যেক অশ্বারোহী তাঁহাকে লক্ষ্য করিয়া এক এক শরসন্ধান করিল। হেমচন্দ্র