বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:মেঘনাদবধ কাব্য.pdf/১৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১২
মেঘনাদবধ কাব্য।
২৭৩—২৯৮

তবু, বৎস, মোহমদে মুগ্ধ যে হৃদয়,
কোমল সে ফুল সম। এ বজ্র আঘাতে,
কত যে কাতর সে, তা জানেন সে জন,
যিনি অন্তর্যামী; আমি কহিতে অক্ষম।
হে বিধি, এ ভবভূমি তব লীলাস্থলী;
কিন্তু, দেব, পরের যাতনা দেখি তুমি
হও কি হে সুখী? পিতা পুত্রদুঃখে দুঃখী—
তুমি হে জগতপিতা, এ কি রীতি তব?
হা পুত্র! হা বীরবাহু! বীরেন্দ্র-কেশরী!
কেমনে ধরিব প্রাণ তোমার বিহনে?”
এই রূপে আক্ষেপিয়া রাক্ষস ঈশ্বর
রাবণ, ফিরায়ে আঁখি, দেখিলেন দূরে
সাগর-মকরালয়। মেঘশ্রেণী যেন
অচল, ভাসিছে জলে শিলাকুল, বাঁধা
দৃঢ় বাঁধে; দুই পাশে তরঙ্গ নিচয়,
ফেনা ময়, ফণাময় যথা ফণীবর,
উথলিছে নিরন্তর গম্ভীর নির্ঘোষে।
অপূর্ব্ব বন্ধন সেতু; রাজপথসম
প্রশস্ত; বহিছে জনস্রোতঃ কলরবে,
স্রোতঃপথে জল যথা বরিষার কালে।
অভিমানে মহামানী বীরকুলর্ষভ
রাবণ, কহিলা বলী সিন্ধু পানে চাহি;—
“কি সুন্দর মালা আজি পরিয়াছ গলে,
প্রচেতঃ! হা ধিক্, ওহে জলদল পতি!
এই কি সাজে তোমারে, অলঙ্ঘ্য, অজেয়
তুমি? হায়, এই কি হে তোমার ভূষণ,