নাশে বৃক্ষে, হে বিধাতঃ, এ দুরন্ত রিপু
তেমতি দুর্ব্বল, দেখ, করিছে আমারে
নিরন্তর! সমূলে নির্ম্মূল হব আমি
এর শরে! তা না হলে, মরিত কি কভু
শূলী শম্ভুসম ভাই কুম্ভকর্ণ মম,
অকালে আমার দোষে? আর যোধ যত—
রাক্ষসকুল রক্ষণ? হায়, সূর্পণখা,
কি কুক্ষণে দেখেছিলি, তুইরে অভাগী,
কাল পঞ্চবটীবনে কালকূটে ভরা
এ ভুজগে? কি কুক্ষণে (তোর দুঃখে দুঃখী)
পাবকশিখা রূপিণী জানকীরে আমি
আনিনু এ হৈমগেহে? হায় ইচ্ছাকরে,
ছাড়িয়া কনকলঙ্কা, নিবিড় কাননে
পশি, এ মনের জ্বালা জুড়াই বিরলে!
কুসুমদাম-সজ্জিত, দীপাবলী তেজে
উজ্জ্বলিত নাট্যশালাসম রে আছিল
এ মোর সুন্দরী পুরী! কিন্তু একে একে
শুখাইছে ফুল এবে, নিবিছে দেউটী;
নীরব রবাব, বীণা, মুরজ, মুরলী;
তবে কেন আর আমি থাকি রে এখানে?
কার রে বাসনা বাস করিতে আঁধারে?”
এইরূপে বিলাপিলা আক্ষেপে রাক্ষস–
কুলপতি রাবণ; হায় রে মরি, যথা
হস্তিনায় অন্ধরাজ, সঞ্জয়ের মুখে
শুনি, গদাধর ভীমসেন গদাঘাতে
হত যত প্রিয়পুত্র কুরুক্ষেত্র-রণে।
পাতা:মেঘনাদবধ কাব্য.pdf/৯
অবয়ব
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৯১—১১৬
প্রথম সর্গ।