আক্ষেপ। এইরূপ এক এক সর্গে প্রকৃত প্রস্তাবে উপযোগী ভিন্ন ভিন্ন বিষয় সকল সুন্দররূপে বিন্যস্ত হইয়াছে। গ্রন্থকার ঐ সকল স্থলে আপনার অসাধারণ কবিত্ব ও বর্ণনাশক্তির একশেষ প্রদর্শন করিয়াছেন।
মেঘনাদকার যে প্রণালীতে কাব্যের আরম্ভ করিয়াছেন, তাহা বঙ্গীয় কবিগণের অভ্যস্ত নহে। কোন একটী গল্পের শেষ অথবা মধ্যভাগ লইয়া কাব্য আরম্ভ ও প্রসঙ্গক্রমে উহাতে পূর্ব্ব বৃত্তান্ত অবতীর্ণ করিবার রীতি প্রথমতঃ গ্রীশদেশের আদি কবি হোমার প্রবর্ত্তিত করেন। তৎপরে ইউরোপের অপরাপর স্থলে ঐ রীতি প্রচলিত হয়। মেঘনাদেও ঐ প্রণালী অনুসৃত হইয়াছে। মেঘনাদকার গ্রীশদেশের মহাকাব্য হোমারকৃত ইলিয়ডকে আদর্শ করিয়াই চলিয়াছেন। ইলিয়ডে ট্রয়যুদ্ধে দেবগণের হস্তক্ষেপ করিবার বিষয় বর্ণিত আছে, মেঘনাদে সেইরূপ ইন্দ্র প্রভৃতি দেবগণের লঙ্কাসমরে অবতীর্ণ হইবার বিষয় বর্ণিত হইয়াছে। ইলিয়ডে ট্রয় অধিপতির জ্যেষ্ঠ পুত্ত্র হেক্টরের বধ বৃত্তান্ত বর্ণিত আছে, মেঘনাদেও লঙ্কাধিপতির জ্যেষ্ঠ পুত্ত্র ইন্দ্রজিতের বধ বৃত্তান্ত বর্ণিত হইয়াছে। ফলতঃ কিঞ্চিৎ মনঃসংযোগপূর্ব্বক উভয় কাব্য পড়িয়া দেখিলে হোমার