পাতা:মেঘ-মল্লার - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১০১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মেঘ-মাষ্ট্রীয় ܦ জায়গায় খুঁজে হয়রান হয়ে তার আশা ছেড়ে দিয়ে ব’সে আছেন, হঠাৎ কখন নিজের বালিশ তুলতে গিয়ে দেখেন তার নীচেই তাজ চাপা আছেযদিও এর আগেও তিনি বালিশের নীচে খুঁজেছেন।--তঁর প্রিয় তরবারিাখানা দুপুর থেকে বিকেলের মধ্যে পাঁচ বার হারিয়ে গেল, আবার পাঁচ বারই সম্পূর্ণ অপ্রত্যাশিত স্থান থেকে খুঁজে পাওয়া গেল। তাম্বুলে এমন সব দ্রব্যের সমাবেশ হ’তে লাগল, যা কোনো কালেই তাম্বুলের উপকরণ নয়।-- তরল-মস্তিষ্ক বন্ধুপত্নীকে কিছুতেই এটে উঠতে না পেরে অত্যাচার-জর্জিরিত নরনারায়ণ রায় ঠিক করলেন তঁর বন্ধুর স্ত্রীট একটু ছিটগ্ৰস্ত। বন্ধুর দুর্দশায় চঞ্চল রায় মনে মনে খুব খুশি হ’লেও বাইরে স্ত্রীকে বললেন-দু'দিনের জঙ্গ এসেছে বেচারী, ওকে তুমি যে রকম বিব্রত ক’রে তুলেছি, ও আর কখনো 44थान अitद नi । দিন-কয়েক এ রকমে কাটবার পর কীৰ্ত্তি রায়ের আদেশে চঞ্চল রায়কে কি কাজে হঠাৎ গৌড়ে যাত্রা করতে হ’ল ! নরনারায়ণ রায়ও বন্ধুপত্নী কখন কি ক'রে বসে, সেই ভয়ে দিনকতক সশঙ্ক অবস্থায় কাল যাপন করবার পর নিজের বজরায় উঠে হাপি ছেড়ে বাচলেন। যাবার সময় লক্ষ্মী দেবী ব’লে দিলেন-এবার আবার যখন আসবে ভাই, এমন একটি বিশ্বাসী লোক সঙ্গে এনে যে রাত-দিন তোমার জিনিষপত্র ঘরে বসে চৌকী দেবে বুঝলে তো ? নয়নারায়ণ রায়ের বজরা রামমঙ্গলের মোহানা ছাড়িয়ে যাবার একটু পরেই জলদসু্যদের দ্বার। আক্রান্ত হ’ল !-তখন মধ্যাহ্নকাল, প্রখর রৌদ্রে বজােরার দক্ষিণ দিকের দিগ্ধলয়-প্রসারী জলরাশি শানানো তলোয়ারের মত ঝকঝাঁক্‌ করছিল, সমুদ্রের সে অংশে এমন কোন নৌকো ছিল না-যারা সাহায্য করতে আসতে পারে। সেটা রায়মঙ্গল আর কালাবদর নদীর মুখ, সামনেই বার সমুদ্র, সন্দ্বীপ চ্যানেল, জলদসু্যদের প্রধান ঘাট।-নরনারায়ণের বজরার রক্ষীরা কেউ হত হ’ল, কেউ সাংঘাতিক জখম হ’ল। নিজে নরনারায়ণ দস্তু্যদের আক্রমণ প্রতিহত করতে গিয়ে উরুদ্দেশে কিসের খোচা খেয়ে সংস্কাশূন্য হয়ে পড়লেন ।