পাতা:মেঘ-মল্লার - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

"মেঘ-মল্লার ... . & 8 দিতে না পেরে আমার মন খুবই খারাপ হয়েছিল। এখন তুমি এখানে কিছুদিন থাকে। ۔ তিনি দু’জনকে খেতে দেবার জন্য ব্যস্ত হয়ে কুটীরের মধ্যে চ’লে গেলেন । প্ৰদ্যুম্ন বললে-কই আমায় মন্ত্রপূত জল দিন তবে ? গুণাঢ্য বললেন- সত্যই তা হ’লে তুমি এতে প্ৰস্তুত ? প্ৰদ্যুম্ন বললে-আমায় আর কিছু বলবেন না, জল দিন । দেবী কুটীরের মধ্যে আহারের স্থান ক’রে দু’জনকে খেতে দিলেনআহারাদি যখন শেষ হ’ল, তখন সন্ধ্যার আর বেশি দেরী নেই। বেতসবনে ছায়া নেমে আসছে, রাঙা সুৰ্য্য আবার উরুবিম্ব গ্রামের উপর ঝুলে পড়েছে । গোধূলির আলোয় দেবীর মুখপন্মে। অপরূপ শ্ৰী ফুটে উঠল। তারপর তিনি ঘট-কক্ষে প্ৰতিদিনের মত নীচের ঝরণায় জল আনতে নেমে গেলেন । গুণাঢ্য বললেন-আমি এখান থেকে আগে চ'লে যাই, তার পর এই ঘটপূর্ণ জল দেবীর গায়ে ছিটিয়ে দিও। র্তার চক্ষু অশ্রীপুর্ণ হ’ল। আবেগভরে তিনি প্ৰদ্যুম্নকে আলিঙ্গন ক’রে বললেন-আমি কাপুরুষ, আমার সে সাহস নেই, নইলে তিনি কুটীরের মধ্যে তঁার দ্রব্যাদি সংগ্ৰহ ক’রে নিলেন। তারপর সরু পথ বেয়ে বেত বনের ধার দিয়ে পাহাড়ের অপর পারে চ’লে গেলেন, তারই নীচে একটু দূরে মগধ থেকে বিদিশা যাওয়ার রাজবায়ু । প্ৰদ্যুম্ন চারিদিক চেয়ে ব’সে বসে ভাবলে, ঐ নীল আকাশের তলে বিশ বৎসর আগে সে মায়ের কোলে জন্মেছিল, তার সে মা বারাণসীতে তাদের গৃহটিতে বসে বাতায়ন-পথে সন্ধ্যার আকাশের দিকে চেয়ে হয়তো প্ৰবাসী পুত্রের কথাই ভাবছেন-মায়ের মুখখানি একবারটি শেষবারের জন্যে দেখতে তার প্রাণ আকুল হ’য়ে উঠল। ঐ পূব আকাশে নবমীর চাঁদ কেমন উজ্জল হয়েছে । মগধ যাবার রাজপথে গাছের সারির মাথায় একটা তারা ফুটে উঠল । বেতীবনের বেতডাটাগুলো তরল অন্ধকারে আর ভালো দেখা i ग ।