e -হ্যা, বেশী দিল তো দুটি নেই, পূর্ণিমার পরেই যেতে হবে। উমারাশী নতমুখে চুপ ক’রে রইল। বললুম-ত তোকেও তো আর বেশী দিন থাকতে হবে না রে! উমারাণী বললে-বাবা বোধ হয়। কাল আসবেন । ওকে একটু সাত্মনা দেবার জন্যে বললুম-তবে আর কি ? এই দুটাে দিন কোন রকমে কাটালেই তো, •• সে একটু চুপ ক'রে থেকে তারপর যেন ভয়ে ভয়ে বললে—যাবাব আগে একবারটি এ বাড়ী আসতে পারবেন না, দাদা ? বললুম-খুব খুব। আসব বৈকি। নিশ্চয়। এর ছয় সাত দিন পরে গৌহাটী রওনা হলুম। এই কদিন নানা কাজে ব্যস্ত হয়ে চারিদিক ঘুরতে হয়েছিল। শচীশের মুখে শুনেছিলুম। উমারার্ণব পশ্চিম যাওয়া হয়নি। কি কারণে তার বাবা তাকে নিতে আসতে পারেন নি। শচীশ মাঝে মাঝে বলত-দাদা, যাবার আগে একবার দিদির সঙ্গে দেখা ক’রে যাবেন। তিনি আপনার কথা প্রায়ই বলেন। ইচ্ছা থাকলেও গৌহাটী যাবার আগে উমারাণীর সঙ্গে দেখা করা আব্দ আমার ঘটে ওঠেনি। গৌহাটী গিয়ে এবার অনেক দিন রইলুম। উমারাণীর কথা প্রথম প্রথম আমার খুব মনে হ’ত, তারপর দিনকতক পরে তেমন বিশেষ ক’রে আর মনে হ’ত না, ক্ৰমে প্রায় ভুলেই গেলুম। কিছুদিন পরে গৌহাটীর চাকরী ছেডে দিলুম। শিলচর, দাৰ্জিলিং নানা চা-বাগান বেড়ালুম। দু'একটি। হাসপাতালেও কাজ করলুম। সব সময় নির্জনে কাটাতুম। এক বাংলোয় থেকে থেকে কেমন হয়েছিল, অনেক লোকের ভিড়, অনেক লোকের একসঙ্গে কথাবাৰ্ত্তা সহ্য করতে পারতুম না। এখানে সন্ধ্যায় পাহাড়ের দেওয়ালের গায়ে কুকুম ছড়ানো সূৰ্য্যাস্ত, চা-ঝোপের চারিপাশ ঘেরা গোধূলির অন্ধকার, গভীর রাত্রির একটা স্তন্ধ গম্ভীর থমথমে ভাব, আর সরল গাছের ডালপালার মধ্যে বাতাসের বিচিত্ৰ সুর, ওই আমার কাছে বড় প্রিয়, বড় স্বস্তিকর ব’লে