পাতা:মেঘ-মল্লার - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৬৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মেঘ-মল্লায় ( তারপর সে সেই পশমের জুতো জোড়া বের ক’রে আমার সামনে মাটিতে রাখলে ; বললে-আমি আন্দাজে বুনেছি, আপনি পায়ে দিয়ে দেখুন দেখি দাদা, হবে এখন বোধ হয়। জুতো জোড়াটা পায়ে ঠিক হয়েছে দেখে উমরাণী বড় খুন্সী হ’ল, তা’র সমস্ত মুখখানা সার্থকতার আনন্দে উজ্জল হ’য়ে উঠল। তারপর সে আবার বললে-দাদা, আমি আপনার গরীব বোন, কখন আসেন না। এখানে, যদি বা এলেন, না পারলুম ভাল ক’রে খাওয়াতে দাওয়াতে, না পারলুম। আদর যত্ন করতে। এসে শুধু কষ্টই পেলেন, কি করব। আমার যেমন কপাল ! অনেকদিন আগের মত সেই রকম গলায় আঁচল দিয়ে সে আমায় প্ৰণাম করলে, তার চোখের জল আমার পায়ের ওপর টপ টপ ক’রে ঝ’রে °फुउ क्लक् । আমি তাকে উঠিয়ে তার মাথার হাত বুলিয়ে দিতে দিতে বললুল-রাণী, তুই আমার মায়ের পেটের বোনই। একথা ভুলে যাসনে কখনো যে তোর বড় ভাই এখনও বেঁচে আছে। যখন চ’লে আসি তখন সে তাদের বাইরের বাড়ীর দোর ধ’রে দাড়িয়ে রইল, আসতে আসতে পেছন ফিরে দেখলুম। সে কাতর চোখে একদৃষ্টি as a যখন পথের দাক ফিরেছি, তখন ও তাকে দেখা যাচ্ছিল, বেলাশেষের হলদে রোদ সুপারি গাছের সারির ফঁাক দিয়ে তার রুক্ষ্ম কেঁকড়া চুলে ঘেরা বিষন্ন মুখখানির ওপর গিয়ে পড়েছিল।••• বছরখানেক পরে আমি আবার চাকরি নিয়ে গেলুম ময়ুরভঞ্জ রাজস্টেটে । সেখানে থাকতে সুরেনের এক পত্রে জানলুম উমারাণী মারা গিয়েছে। যাবেই, তা জানতুম। সেবার যখন তার কাছ থেকে চ'লে আসি তখনই বুঝে এসেছিলুম, এই তার সঙ্গে শেষ দেখা। সুরেনকে এসে পত্ৰ লিখেছিলুম। উমারাণীর অবস্থা সব খুলে, কোন একটা ভাল জায়গায় তাকে