জ্বরের উপর এই স্পর্শ তাঁহার সর্বাঙ্গ জুড়াইয়া দিতে লাগিল। ইচ্ছা করিতে লাগিল, এমন করিয়া বহুক্ষণ কাটান। কিন্তু একটু পরেই ললিত উস্খুস্ করিতে লাগিল, পুতুল-নাচ হয়ত এতক্ষণে শুরু হইয়া গিয়াছে মনে করিয়া, ভিটরে ভিটরে তাহার চিত্ত অস্থির হইয়া উঠিল।
ছেলের মনের কথা বুঝিতে পারিয়া মা মনে মনে হাসিয়া বলিলেন, আচ্ছা যা, দেখে আয়, বেশী রাত করিস্ নে যেন।
না মা, এক্ষুনি ফিরে আসব বলিয়া ললিত ঘরের বাহির হইয়া গেল। কিন্তু মিনিট-দুই পরে ফিরিয়া আসিয়া বলিল, মা, একটা কথা বলব?
মা হাসিমুখে বলিলেন, একটা টাকা চাই ত? ঐ কুলুঙ্গিতে আছে, নিগে- দেখিস, বেশী নিস নে যেন।
না মা, টাকা চাই নে। বল তুমি শুনবে?
মা বিস্ময় প্রকাশ করিয়া বলিলেন, টাকা চাই নে? তবে কি কথা রে?
ললিত আর একটু কাছে আসিয়া চুপি চুপি বলিল, কেষ্টমামাকে একবার আসতে দেবে? ঘরে ঢুকবে না-ঐ দোরগোড়া থেকে একটিবার তোমাকে দেখেই চলে যাবে। কালকেও বাইরে এসে বসে ছিল, আজকেও এসে বসে আছে।
হেমাঙ্গিনী ব্যস্ত হইয়া উঠিয়া বসিলেন-যা যা ললিত, এক্ষুনি ডেকে নিয়ে আয়-আহা হা, বসে আছে, তোরা কেউ আমাকে জানাসিনি রে?
ভয়ে আসতে চায় না যে, বলিয়া ললিত চলিয়া গেল। মিনিটখানেক পরে কেষ্ট ঘরে ঢুকিয়া মাটির দিকে ঘাড় বাঁকাইয়া দেয়ালে ঠেস দিয়া দাঁড়াইল।
হেমাঙ্গিনী ডাকিলেন, এস দাদা, এস।
কেষ্ট তেমনিভাবে স্থির হইয়া রহিল। তিনি নিজে তখন উঠিয়া আসিয়া কেষ্টর হাত ধরিয়া বিছানায় লইয়া গেলেন। পিঠে হাত
২৬