বুকের অন্তস্থল পর্য্যন্ত উদ্ভাসিত করিয়া ফেলিল। তাহার মুহূর্ত্তে সাধ হইল, এই প্রকাশ্য রাজপথেই ওই দুই রাঙা পায়ে লুঢ়াইয়া পড়ে, কন্তু চক্ষের নিমিষে গভীর লজ্জায় তাহার মাথা এমনি হেঁট হইয়া গল যে, সে মুখ তুলিয়া একবার প্রিয়তমার মুখের দিকে চাহিয়া দখিতেও পারিল না, নিঃশব্দে নতমুখে ধীরে ধীরে চলিয়া গেল।
ও-ফুটপাতে তাঁহার আদেশমত দাসী অপেক্ষা করিতেছিল, কাছে আসিয়া কহিল, আচ্ছা দিদিমণি, বাবুটকে এমন করে নাচিয়ে নিয়ে বেড়াচ্ছ কেন? বলি, কিছু আছে টাছে? দু’পয়সা টানতে পারবে তা?
রমণী হাসিয়া বলিল, তা জানি নে, কিন্তু হাবা-গোবা লোকগুলোকে নাকে দড়ি দিয়ে ঘুরোতে আমার বেশ লাগে।
দাসীটিও খুব খানিকটা হাসিয়া বলিল, এতও পার তুমি। কিন্তু তাই বল দিদিমণি, দেখতে যেন রাজপুত্তুর। যেমন চোখ-মুখ, তেমনি ঙ। তোমাদের দুটিকে দিব্যি মানায়-দাঁড়িয়ে কথা কছিল, যেন একটি জোড়া-গোলাপ ফুটে ছিল।
রমণী মুখ টিপিয়া বলিল, আচ্ছা চল্। পছন্দ হয়ে থাকে ত না য় তুই নিস্।
দাসীও হটবার পাত্রা নয়, সেও জবাব দিল, না দিদিমণি, ও জনিস প্রাণ ধরে কাউকে দিতে পারবে না, তা বলে দিলুম।
॥চার॥
জ্ঞানীরা কহিয়াছেন, অসম্ভব। কাণ্ড চোখে দেখিলেও বলিবে না, কারণ, অজ্ঞানীরা বিশ্বাস করে না। এই অপরাধেই শ্রীমন্ত বেচারা নাকি মশানে গিয়াছিল। সে যাই হোক, ইহা অতি সত্য কথা, সত্য পাকটি সেদিন বাসায় ফিরিয়া টেনিসন্ পড়িয়াছিল এবং ডন্ জুয়ানের ব্যাংলা তর্জমা করিতে বসিয়াছিল। অতবড় ছেলে, কিন্তু একবারও এ ংশয়ের কণামাত্রও তাহার মনে উঠে নাই যে, দিনের বেলা সহরের থে-ঘাটে এমন অদ্ভূত প্রেমের বান ডাকা সম্ভব কি না, কিংবা সে