বানের স্রোতে গা ভাসাইতে চলা নিরাপদ কি না।
দিন-দুই পরে স্নানান্তে বাটী ফিরিবার পথে অপরিচিতা সহসা কহিল, কাল রাত্রে থিয়েটার দেখতে গিয়েছিলুম, সরলার কষ্ট দেখলে বুক ফেটে যায়-না?
সত্য সরলার প্লে দেখে নাই, স্বর্ণলতা বই পড়িয়াছিল; আস্তে। আস্তে বলিল, হাঁ বড় দুঃখ পেয়েই মারা গেল।
রমণী দীর্ঘনিশ্বাস ফেলিয়া বলিল, উঃ, কি ভয়ানক কষ্ট। আচ্ছা সরলাই বা তার স্বামীকে এত ভালবাসলে কি করে, আর তার বড় জা-ই বা পারেনি কেন বলতে পার?
সত্য সংক্ষেপে জবাব দিল, স্বভাব।
রমণী কহিল, ঠিক তাই! বিয়ে তা সকলেরই হয়, কিন্তু সব স্ত্রী পুরুষই কি পরস্পরকে সমান ভালবাসতে পারে? পারে না। কিন্তু লোক আছে, মরবার দিনটি পর্য্যন্ত ভালবাসা কি, জানতেও পায় না। জানিবার ক্ষমতা তাদের থাকে না। দেখনি, কত লোক গান-বাজন হাজার ভাল হলেও মন দিয়ে শুনতে পারে না, কত লোক কিছুতেই রাগে না। —রাগতেই পারে না! লোকে তাদের খুব গুণ গায় বটে, আমার কিন্তু নিন্দে করতে ইচ্ছা করে।
সত্য হাসিয়া বলিল, কেন?
রমণী উদ্দীপ্ত কণ্ঠে উত্তর করিল, তারা অক্ষম বলে। অক্ষমতার কিছু কিছু গুণ থাকলেও থাকতে পারে, কিন্তু দোষটাই বেশী। এ যেমন সরলার ভাশুর, স্ত্রীর অতবড় অত্যাচারেও তার রাগ হ’ল না।
সত্য চুপ করিয়া রহিল।
সে পুনরায় কহিল, আর তার স্ত্রী, ঐ প্রমদাটা কি শয়তান মেয়েমানুষ! আমি থাকতুম ত রাক্ষসীর গলা টিপে দিতুম।
সত্য সহস্যে কহিল, থাকতে কি করে? প্রমদা বলে সত্যই কেউ ছিল না-কবির কল্পনা-
রমণী বাধা দিয়া কহিল, তবে অমন কল্পনা করা কেন? আছ সবাই বলে, সমস্ত মানুষের ভেতরই ভগবান আছেন, আত্মা আছে
৫০