বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:মেজদিদি - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৫৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

করিয়া সত্যকে টানিয়া আনিয়া একটা চৌকির উপর বসাইয়া দিয়া পায়ের কাছে হাঁটু গাড়িয়া বসিয়া হাত জোর করিয়া শুরু করিয়া দিল—

আজু রজনী হাম, ভাগে পোহায়নু
পেখনু পিয়া মুখ-চন্দা
জীবন যৌবন হাম, সফল করি মাননু
দশ-দিশ ভেল নিরদন্দা।
আজু মণ্টু গেহ, গেহ করি মাননু
আজু মঝু দেহ ভেল দেহা।
আজু বিহি মোহে, অনুকূল হোয়ল
টুটল সবহু সন্দেহা।
পাঁচবাণ অব লাখবাণ হউ
মলয় পবন বহু মন্দা।
অব সো ন যুবহু মরি পরিহোয়ত—
তব মানব নিজ দেহা—

 যে লোকটা মদ খাইতেছিল, উঠিয়া আসিয়া পায়ের কাছে গড় হইয়া প্রণাম করিল। তাহার নেশা হইয়াছিল, কাঁদিয়া ফেলিয়া বলিল, ঠাকুরমশাই, বড় পাতকী আমি—একটু পদরেণু—

 অদৃষ্টের বিড়ম্বনায় আজ সত্য স্নান করিয়া একখানা গরদের কাপড় পরিয়াছিল।

 যে লোকটা হারমোনিয়াম বাজাইতেছিল, তাহার কতকটা কাণ্ডজ্ঞান ছিল, সে সহানুভূতির স্বরে কহিল, কেন বেচারাকে মিছামিছি সঙ্‌ সাজাচ্চ?

 বিজ্‌লী হাসিতে হাসিতে বলিল, বাঃ, মিছামিছি কিসে? ও সত্যকারের সঙ বলেই ত এমন আমোদর দিনে ঘরে এনে তোমাদের তামাসা দেখাচ্চি। আচ্ছা, মাথা খাস গাবু, সত্য বল্‌ ত ভাই, কি আমাকে তুই ভেবেছিলি? নিত্য গঙ্গাস্নানে যাই, কাজেই ব্রাহ্মও নই, মোচলমান খ্রীষ্টানও নই। হিঁদুর ঘরের এতবড় ধাড়ী মেয়ে, হয়

৫৪