না।
বিজ্লী উঠিয়া দাঁড়াইল। তাহার পরিহাসের স্বরে এবার তীব্রত মিশিল; জোর দিয়া কহিল, খাবেই। এই বলছি তোমাকে, আজি না হয় কাল, না হয় দু’দিন পরে খাবেই তুমি।
সত্য ঘাড় নাড়িয়া বলিল, দেখুন, ভুল সকলেরই হয়। আমার ভুল যে কত বড়, তা সবাই টের পেয়েচে, কিন্তু আপনারও ভুল হচ্চে আজ নয়, দুদিন পরে নয়, এ-জন্মে নয়, আগামী জন্মে নয়- কোন কালে আপনার ছোয়া খাব না। অনুমতি করুন, আমি যাই-আপনার নিশ্বাসে আমার রক্ত শুকিয়ে যাচ্ছে।
তাহার মুখের উপর গভীর ঘূণার এমনি সুস্পষ্ট ছায়া পড়িল যে তাহা ঐ মাতালটার চক্ষুও এড়াইল না। সে মাথা নাড়িয়া কহিল বিজ্লীবিবি, অরসিকেষু রহস্য নিবেদনম্। যেতে দাও - যেতে দাও —সকালবেলার আমোদটাই ও মাটি করে দিলে।
বিজ্লী জবাব দিল না, স্তম্ভিত হইয়া সত্যর মুখপানে চাহিয়া দাঁড়াইয়া রহিল। যথার্থই তাহার ভয়ানক ভুল হইয়াছিল। সে ত কল্পনাও করে নাই, এমনি মুখচোরা শান্ত লোক এমন করিয়া বলিতে পারে।
সত্য আসন ছাড়িয়া উঠিয়া দাঁড়াইল। বিজ্লী মৃদুস্বরে কহিল আর একটু বসো।
মাতাল শুনিতে পাইয়া চেঁচাইয়া উঠিল, উঁ হুঁ হুঁ, প্রথম চোরে একটু জোর খেলবে-যেতে দাও-যেতে দাও-সুতো ছাড়ো-সুতে ছাড়ো-
সত্য ঘরের বাহিরে আসিয়া পড়িল; বিজ্লী পিছনে আসিয় পথরোধ করিয়া চুপি চুপি বলিল, ওরা দেখতে পাবে, তাই-নইলে হাতজোড় করে বলতুম, আমার বড় অপবাধ হয়েচে-
সত্য অন্যদিকে মুখ করিয়া রহিল।
সে পুর্নবার কহিল, এই পাশের ঘরটা আমার পড়ার ঘর একবার দেখবে না? একটিবার এসো, মাপ চাচ্ছি।
৫৬