পাতা:মেদিনীপুরের ইতিহাস প্রথম ভাগ.djvu/১০৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

হিন্দু রাজত্ব—তাম্রলিপ্ত-রাজ্য। Եֆ লৌহিত্যের উপকণ্ঠ (ব্রহ্মপুত্ৰনদ ) হইতে পশ্চিমে প্রয়োধি পৰ্য্যন্ত ও মহেন্দ্রগিরি (কলিঙ্গ ) হইতে তুঙ্গশিখর গঙ্গাশ্লিষ্ট-সামু হিমালয় পর্য্যন্ত বিস্তৃত ছিল । সুতরাং সে সময় তাম্রলিপ্তও যে কুষাণ-সাম্রাজ্য বা গুপ্তাধিকারভুক্ত হইয়াছিল, তাহ অনুমান করা অসঙ্গত হইবে না। কিন্তু তখনও তাম্রলিপ্ত যে একটি পৃথক্ রাজ্য ছিল, বৌদ্ধ পরিব্রাজকদিগের ভ্রমণ-বৃত্তান্ত হইতে ও মার্কণ্ডেরপুরাণ, বৃহৎসংহিতা প্রভৃতি গ্রন্থ হইতেও তাহার পরিচয় পাওয়া যায়। ইহা হইতে অনুমান করা যায় যে, তাম্রলিপ্তের সেই প্রাচীন রাজ্যংশ অশোক কর্তৃক উন্মলিত হইলে পরে যে বা যে কয়টি রাজবংশ তাম্রলিপ্তের সিংহাসনে প্রতিষ্ঠিত হইয়াছিলেন, তাহারা সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে রাজত্ব করিতে পারেন নাই । মগধ বা কলিঙ্গের সিংহাসনে প্রতিষ্ঠিত রাজবংশের সামূন্তরূপেই তাহার রাজত্ব করিয়া গিয়াছেন। তাম্রলিপ্ত বা সুহ্ম রাজ্যের সীমাও তখন অনেক কমিয়া গিয়া আরও * কয়েকটি সামন্ত-রাজ্যের স্বষ্টি করিরাছিল। তবে এই সকল রাজ্যের সামন্তগণই সময় সময় প্রধান রাজবংশের দুৰ্ব্বলতা দর্শনে সুযোগ পাইয়া কখনও কখনও কাহারও অধীনতাই স্বীকার করিতেন না ; যত দিন পারিতেন, স্বাধীনভাবেই রাজত্ব করিতেন । আবার খারবেল, কাণিস্ক, সমুদ্রগুপ্ত, কুমারগুপ্ত, শশাঙ্ক, হৰ্ষবৰ্দ্ধন প্রভৃতির স্থায় ক্ষমতাশালী রাজগণ যখন রাজচক্রবর্তী হইতেন, তখন তাহারা ঐ সকল র:ঞ্জবংশকেও অধীনতাস্বীকারে বাধা করিতেন। পরবর্তিকালে তাম্রলিপ্ত-রাজ্যে প্রতিষ্ঠিত রাজগণ এইরূপ সামস্ত বা অৰ্দ্ধস্বাধীন রাজা ছিলেন বলিয়াই আমরা অনুমান করি এবং এই জন্যই বোধ হয়, তাম্রলিপ্তের কোন রাজার প্রদত্ত শাসনপত্র বা সেই বংশের কোন রাজার নামাঙ্কিত মুদ্রাও আজ পর্যন্ত আবিষ্কৃত হয় নাই। :