পাতা:মেদিনীপুরের ইতিহাস প্রথম ভাগ.djvu/২৪১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মহারাষ্ট্রীয় উপদ্রব বা বৰ্গীর হাঙ্গামা । え>> সুতরাং আশঙ্কার কোন কারণ নাই মনে করিয়া, বিজয় গৰ্ব্বোৎফুর নবাব অধিকাংশ সৈন্যকেই মুর্শিদাবাদ যাত্রার আদেশ দিয়া, মাত্র পঁাচ ছয় সহস্র সৈনিক সঙ্গে লইয়া যখন কানন-কুন্তলা-মহীর সৌন্দর্য্য দেখিতে দেখিতে ধীরে ধীরে রাজধানীর দিকে ফিরিতেছিলেন, সেই সময় মেদিনীপুরে অবস্থান কালে, নির্মেঘ গগনে চন্দ্রনাদের ন্যায় সংবাদ পাইলেন, চল্লিশ হাজার মহারাষ্ট্রীয় অশ্বারোহী লইয়া ভাস্কর পণ্ডিত বাঙ্গালার প্রান্তে আবির্ভূত হইয়াছেন। নবাব তখন মধ্যাহ্ন নমাজ করিতেছিলেন; তিনি এই সংবাদে ভীত ভাব না দেখাইয়া সম্বর্ণে বলিলেন, “সেই কাফেরগণ কোথায় ? জগতে কোথায় না আমি তাহাদিগকে দণ্ডিত করিতে পারি?” কিন্তু অত্যন্ত্রকাল পরেই বুঝিয়াছিলেন, এ বিপদে দপের অবকাশ নাই। ঐ সৈন্যগণ সে সময় মাত্র বিংশ ক্রোশ ব্যবধানে ছিল। পাৰ্ব্বত্য বস্তার মত তাহারা প্রবলবেগে ময়ূরভঞ্জ ও পঞ্চকোট ভেদ করিয়া নবাবের দিকে দ্রুত গতিতে অগ্রসর হইতেছিল। মহারাষ্ট্রীয়-বাহিনী কর্তৃক তাড়িত হইয়া নবাব প্রথমে কাটোয়ায় ও পরে রাজধানী মুর্শিদাবাদে পলায়ন করিয়া নিরাপদ হ’ন। ঐ সময় আষাঢ়ের ঘন বরিবণ আরম্ভ হওয়ায় নবাব বর্ষাকালে বল সঞ্চয় ও মুর্শিদাবাদ রক্ষার উপায় বিধান করিয়াই ক্ষান্ত থাকিলেন। কিন্তু ঐ অবসরে মহারাষ্ট্রীয় সৈন্য পশ্চিম-বঙ্গের অনেক স্থানই অধিকার করিয়া লইল। মেদিনীপুরের ফৌজদার মীর কলম্বর বহু চেষ্টার পর দুর্গ রক্ষা করিলেন বটে, কিন্তু জেলার অধিকাংশ স্থানই মারহাট্টাদিগের করগত হইল। শেষে শরতের অবসানে দেশে গমনাগমন সুসাধ্য হইলে ১৭৪২ খৃষ্টাব্দের অক্টোবর মাসে নবাব বহু সৈন্য লইয়া অগ্রসর হইলেন ; মহারাষ্ট্রীয়গণ সে আক্রমণ সহ করিতে না পারিয়া যে সকল স্থান অধিকার করিয়া লইয়াছিল তাহা পরিত্যাগ করিয়া পলায়ন করিতে