পাতা:মেদিনীপুরের ইতিহাস প্রথম ভাগ.djvu/২৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
ভৌমিক বিবরণ।
১১

সুবর্ণ রাজ্যের রাজধানী ছিল। প্রত্নতত্ত্ববিদ্‌ জেনারেল কানিংহাম সাহেবও এই মতাবলম্বী।[১]

 ইউয়ান চোয়াঙের পরবর্তী সময়ে রচিত মার্কণ্ডেয়পুরাণে কর্ণসুবর্ণের নাম নাই।[২] মালভূম বা মল্লভূমি।তবে বাঁকুড়া ও মানভূম জেলায় মালপাহাড়ীদের একটি স্বতন্ত্র রাজ্যের কথা আছে। জানা গিয়াছে, বাকুড়া-বিষ্ণুপুরের প্রাচীন রাজবংশ মাল বা মল্লজাতীয় ছিলেন; মেদিনীপুর জেলার কিয়দংশও অদ্যাপি মালভূম বা মল্লভূম নামে পরিচিত। ইহা হইতে অনুমান করা যাইতে পারে যে, প্রাচীন উড্রদেশের কিয়দংশও পরবর্ত্তিকালে কর্ণসুবর্ণ-রাজ্যের অন্তভূর্ত হইয়াছিল; পরে আবার ঐ ভূভাগের কিয়দংশই মল্লভূম নামে পরিচিত হয়।

 পরবর্ত্তিকালে সুহ্ম বা তাম্রলিপ্ত রাজ্যের স্বাতন্ত্র্য নষ্ট হইয়া গেলে, উহার কিয়দংশ উৎকলের সহিত মিলিত এবং অবশিষ্টাংশ রাঢ়দেশ নামে পরিচিত হয়।রাঢ়দেশ। এই সময় রাঢ়দেশ বলিতে প্রায় সমস্ত পশ্চিমবঙ্গকেই বুঝাইত। মহাভারতের টীকাকার নীলকণ্ঠ বলেন, “সুহ্মাঃ—রাঢ়াঃ”, সুহ্মই রাঢ়দেশ। খৃষ্টীয় একাদশ শতাব্দীতে রচিত কৃষ্ণ মিশ্রের প্রবোধ-চন্দ্রোদয় নাটকে রাঢ়দেশের নাম পাওয়া যায়।

“গৌড়ং রাষ্ট্রমুত্তমং নিরুপমা তথাপি রাঢ়াপুরী
 ভূরিশ্রেষ্ঠিকনামধামপরমং তত্রোত্তমা ন পিতঃ।”

 রাঢ়দেশ উত্তররাঢ় ও দক্ষিণরাঢ় নামে দুই ভাগে বিভক্ত ছিল।


  1. Archaelogical Survey Report Vol. VIII. p. 9.
  2. সুপণ্ডিত উইলসন সাহেবের মতে মার্কণ্ডেয়পুরাণ খৃঃ নবম কি দশম শতাব্দীতে রচিত হইয়াছিল।