পাতা:মেদিনীপুরের ইতিহাস প্রথম ভাগ.djvu/৩৬৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্রাচীন কীৰ্ত্তি ও কাহিনী। yళి সমাধি-স্তম্ভের এই লিপিটি হইতে শতাধিক বৎসর পূৰ্ব্বের বাঙ্গাল ভাষার যেরূপ নমুনা পাওয়া যায়, সেইরূপ বাঙ্গালী ভাষা ও বাঙ্গালীদের প্রতি তৎকালীনু রাজ কৰ্ম্মচারীদের যে বিশেষ অনুরাগ ছিল তাহার পরিচয়ও পাওয়া যায়। ইংরাজের সমাধি স্তম্ভে বাঙ্গালা ভাষায় লিখিত প্রস্তর ফলক বড় একটা দেখা যায় না। মেদিনীপুর সহরের ‘পদ্মাবতী ঘাট’ নামক শ্মশানটা ভারত-গৌরব সার রাস বিহারী ঘোষের কীৰ্ত্তি । জননী পদ্মাবতীর স্মৃতিরক্ষণকল্পে তিনি এই শ্মশান ঘাট নিৰ্ম্মিত করিয়া দিয়াছিলেন। .ே পদ্মাবতী এই সহরে তাহার পিত্রালয়ে প্রাণত্যাগ করিয়াছিলেন। মেদিনীপুর সহরে যে কয়েকট পুষ্করিণী আছে তন্মধ্যে লালদীঘি হ্যারিসন দীঘি, মুকুন্দ সাগর, দ্বারিবাধ ও চন্দ্রীকর উল্লেখ যোগ্য। মেদিনীপুর সহরের প্রায় তিন মাইল পশ্চিমে গোপ গিরি নামে একটি ছোট পাহাড় আছে। জনশ্রুতি, ঐ স্থানে মহাভারতোক্ত মৎস্তাধিপতি বিরাট রাজার "দক্ষিণ গোগৃহ” ছিল। বর্তমান যুগের পণ্ডিতগণ রাজপুতানার মধ্যে মৎস্তৃদেশের স্থান-নির্দেশ করিয়া থাকেন । কিন্তু পশ্চিম-বঙ্গের বিশেষতঃ উত্তরে রঙ্গপুর জেলার গাইবাধা মহকুমা হইতে দক্ষিণে মেদিনীপুর জেলার কাথি মহকুমার মধ্যবর্তী ভূভাগের নান-স্থানে মৎস্তদেশাধিপতি বিরাট রাজার বাড়ী ও গোগৃহাদির চিহ্ন প্রদর্শিত হইয়া থাকে। আমাদের অম্বুমান, মৎস্তদেশাধিপতি বিরাটের সহিত এই সকল কীৰ্ত্তির কোন সম্বন্ধ নাই ; এগুলি বৌদ্ধকীৰ্ত্তি। কালসহকারে বৌদ্ধ ধৰ্ম্ম লোপের সঙ্গে সঙ্গে প্রাচীন বৌদ্ধ বিহারগুলি যেরূপে হিন্দু দেব-দেবীর মন্দিরে পরিণত হইয়াছে, এই সকল স্থানও সেই কারণে এইরূপ পৌরাণিক গোপ গিরি।