পাতা:মেদিনীপুরের ইতিহাস প্রথম ভাগ.djvu/৩৮৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

{&8 মেদিনীপুরের ইতিহাস । বিঘ ভূমি নিবিড় জঙ্গলাকীর্ণ। একস্থানে একটি জীর্ণ প্রাচীন মন্দিরের ধ্বংসাবশেষ দৃষ্ট হয়। এইরূপ কিম্বদন্তী যে, বহুকাল পূৰ্ব্বে ঐ স্থানেই পাহাড়ের পূজা হইত। কিন্তু বলিদানের পর তথায় আর কাহারও থাকিবার বা যাইবার অধিকার ছিল না। এক সময় পুজক বলির খড়গট আনিতে ভুলিয়া গিয়া পুনরায় যখন উহা আনিবার জন্ত উপরে গমন করেন, তখন দেখেন যে, দেবতা তথায় দুইটি ব্যাঘ্ৰ লইয়া উপবিষ্ট আছেন। দেবতার প্রত্যাদেশ হয়, ‘আর কখনও এইস্থানে আসিও না— এবার হইতে নীচে পূজা করিও। তদবধি আর উপরে পূজা হয় ন৷ ব। সচরাচর কেহ উপরে উঠেও না । দেবতার আদেশে হউক বা না হউক, ব্যান্ত্রের ভয়েই যে পূজকগণ আর অত উচ্চে সেই জঙ্গলাকীর্ণ স্থানের জীর্ণ মন্দিরে বসিয়া পূজা করিতে সাহসী হন নাই তাহা নিঃসন্দেহে বলা যাইতে পারে। পাহাড়টার সামুদেশে দে হরির স্থান নামে একটি প্রশস্ত স্থান আছে, তথায় কতকগুলি বড় বড় প্রস্তর আছে। এক্ষণে পূজা প্রথমে সেইস্থানে হয় ; তৎপরে পাহাড়ের পূর্বদিক দিয় উপরে উঠিবার যে পথ আছে, সেই পথে কিয়দুর উঠিলে যে স্থানে উপনীত হওয়া যার উহাই পূজার দ্বিতীয় স্থান। স্থানটা অত্যন্ত ঢালু বলিয়া বেশী লোক একত্র তথায় থাকিতে পারে না । একদল মামিয়া আসিলে আবার একদল উপরে যাইতে পারে। পূজার স্থানে প্রায়ু শত হস্ত দীর্ঘ এবং প্রায় পঞ্চাশ হস্ত প্রস্থ ও তদনুরূপ উচ্চ একটি প্রকাণ্ড প্রস্তর আছে। উহার মধ্য দিয়া একটি গৰ্ত্ত আছে ; পূজা শেষ হইলে যাত্রিগণ ঐ গর্ভের উপরে আমলকী ও পুষ্পাঞ্জলি দিয়া নিয়ে হাত পাতিয়া থাকে। পূজারী বলেন, উক্ত আমলকী ও পুষ্প যত শীঘ্ৰ যাহার হস্তে পতিত হয় তাহার মনস্কামনা তত শীঘ্র পূর্ণ হইয়া থাকে। আর যাহার হস্তে একবারে পড়ে নী—তাঁহার মনস্কামনাও সিদ্ধ হয় না ।