পাতা:মেদিনীপুরের ইতিহাস প্রথম ভাগ.djvu/৪২২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Wybr মেদিনীপুরের ইতিহাস । ঐ বস্তায় খাজুরীর অধিকাংশই হুগলী নদী ও বঙ্গোপসাগর গ্রাস করিয়া লইয়া খাজুরীকে জনমানবশূন্ত এক শ্ৰীহীন শ্মশানে পরিণত করিয়া দিয়াছে। খাজুরীর সেই সমস্ত সুবৃহৎ অট্টালিকা, মুরম্য উষ্ঠান, সমস্তই নদী গর্ভে বিলীন হইয়া গিয়াছে। কালচক্রের পরিবর্তনে পুনরায় সেই স্থানে পলি মৃত্তিক পড়িয়া এক্ষণে আবার নুতন ভূমি জাগিয়া উঠিতেছে। কিন্তু সেই সকল প্রাচীন কীৰ্ত্তির চিন্তু মাত্র তথায় নাই। খাজুরীর বর্তমান অবস্থা দেখিলে কেহ কল্পনাও করিতে পারিবেন না যে, এক সময় ঐ স্থানে একটি সমৃদ্ধিশালী জনাকীর্ণ নগর ছিল ; একদিন ঐ স্থান স্বদেশীয় ও বিদেশীয় অসংখ্য নরনারীর পোতারোহণ কোলাহলে মুখরিত থাকিত। ১৮৬৪ খ্ৰীষ্টাব্দের সেই ভীষণ জলপ্লাবনেরপরে খাজুরীর ঐসৌভাগ্য নষ্ট হইয় গেলে খাজুরীর বম্বর ও টেলিগ্রাফ অফিসটি উঠিয়া যায়। খাজুরীয় চারিদিক এক্ষণে বন জঙ্গলে পূর্ণ; হিংস্র জন্তুর আবাস ভূমি। খাজুরীর প্রাচীন কীৰ্ত্তির পরিচর দিতে এক্ষণে দুইটি মাত্র অট্টালিকা ও একটি সমাধি-ক্ষেত্র বিদ্যমান। অট্টালিকা দুইটির মধ্যে একটি এক্ষণে পুর্ত বিভাগের ডাক বাংলো এবং অন্তটি খাজুরীর পোষ্ট-আফিসরূপে ব্যবহৃত হইতেছে। এই পোষ্ট আফিসটাই পূৰ্ব্বে পোর্ট আফিস ছিল এবং উহার দ্বিতলে যে সুউচ্চ ক্ষুদ্র গৃহটি রহিয়াছে উহাতেই টেলিগ্রাফের যন্ত্ৰটী স্থাপিত ছিল। ঐ গৃহে একটি দূরবীক্ষণ যন্ত্রও থাকিত ; পোর্ট অফিসার উহার সাহায্যে জাহাঙ্গাদির গতিবিধি লক্ষ্য করিয়া আবণ্ডকীয় সঙ্কেতাদি করিতেন। গৃহটর সন্মুখে একটি সাঙ্কেতিক ( Signal Mast) দ্বও ছিল । উহার ধ্বংসাবশেষ অদ্যাপি রহিয়াছে এবং তথায় কয়েকট কামান এখনও পড়িয়া- আছে। তন্মধ্যে সুবৃহৎ কামানমির গাত্রে ১৭৯৩ খৃষ্টাশ্ব খোদিত আছে। -