পাতা:মেদিনীপুরের ইতিহাস প্রথম ভাগ.djvu/৪৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
২৮
মেদিনীপুরের ইতিহাস।

পাদমূল ধৌত করিয়া প্রবাহিত হইত। পরবর্ত্তিকালে খৃষ্টীয় সপ্তম শতাব্দীতে লিখিত সুবিখ্যাত চৈনিক পরিব্রাজক ইউয়ান চোয়াঙের ভ্রমণবৃত্তান্তেও তাম্রলিপ্ত উপসাগরের তীরবর্ত্তী একটি সমৃদ্ধিশালী বন্দর বলিয়া উল্লিখিত হইয়াছে। সমুদ্র তখন তাম্রলিপ্তের প্রায় আট ক্রোশ দূরে সরিয়া গিয়াছিল। এক্ষণে ষাট ক্রোশ অন্তরে গিয়াছে। সুতরাং ইহা অনুমান করা অসঙ্গত হইবে না যে, যে সময় সমুদ্র তাম্রলিপ্তের পাদমূল ধৌত করিয়া প্রবাহিত হইত, সে সময় বর্ত্তমান তমলুকের দক্ষিণে ও দক্ষিণ পূর্ব্বে অবস্থিত সূতাহাটা, নন্দীগ্রাম, খাজুরী প্রভৃতি থানার কোনটির সম্পূর্ণ, কোনটির বা অধিকাংশ ভূমিরই অস্তিত্ব ছিল না। ক্রমশঃ নদীর মোহানায় পলি পড়িয়া ঐ সকল স্থানের উৎপত্তি হইয়াছে। ঐ সকল স্থানের ভূমিপ্রকৃতিও বর্ত্তমানে সেই কথার সাক্ষ্য দিতেছে।

 কাল যুগে যুগে মেদিনীপুর জেলার সীমায় এইরূপে অনেক পরিবর্ত্তন সংঘটিত করিয়া দিয়াছে। বর্ত্তমান মেদিনীপুর জেলার ভূমি-পরিমাণ উত্তর-দক্ষিণে এবং পূর্ব্ব-পশ্চিমে সমান—কিঞ্চিদূন প্রায় এক শত মাইল। ভূমি-প্রকৃতি। এই জেলার দক্ষিণে সাগরতট হইতে যতই উত্তরে যাওয়া যায়, ভূমি ক্রমশঃ ততই প্রাচীন, উন্নত, অনুর্ব্বর এবং প্রস্তরময় পরিলক্ষিত হয়। মেদিনীপুর জেলার ভূমি-প্রকৃতি সাধারণতঃ দুই ভাগে বিভক্ত। এই জেলার উত্তরে হুগলী জেলার সীমা হইতে চন্দ্রকোণ ও কেশপুর থানার মধ্য দিয়া বর্দ্ধমান রাস্তা নামে পরিচিত যে পথটি মেদিনীপুর সহর পর্য্যন্ত আসিয়া জগন্নাথ রাস্তার সহিত মিলিত হইয়া বালেশ্বর জেলার মধ্যে প্রবেশপূর্ব্বক এই জেলাকে উত্তর-দক্ষিণে দ্বিধা বিভক্ত করিয়া গিয়াছে, সেই রাজপথটি এই জেলার দ্বিবিধ ভূমি-প্রকৃতি নির্দ্দেশ করিয়া দেয়। শ্রীযুক্ত ওম্যালী সাহেব (Mr. L.S.S. O’malley I.C.S.) মেদিনীপুরের গেজে-