পাতা:মেদিনীপুরের ইতিহাস প্রথম ভাগ.djvu/৫৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩৬
মেদিনীপুরের ইতিহাস।

ভূমি আছে। সুতরাং দেখা যাইতেছে, মোট ভূমির শতকরা প্রায় ৬২ ভাগ আবাদী, ২২ ভাগ আবাদের যোগ্য পতিত এবং অবশিষ্ট ১৬ ভাগ আবাদের অনুপযুক্ত পতিত ভূমি। উপরি উক্ত ১৯,৯৪,৩৭৫ একার বা ৩,১১৬ বর্গ-মাইল ভূমির মধ্য হইতে ৪৭,১৭৪ একার বা ৭৪ বর্গ-মাইল মাত্র ভূমি সংবৎসরের মধ্যে দুইবার চাষ হয়। অর্থাৎ মোট ২০,৪১,৫৫১ একার বা ৩,১৯০ বর্গমাইল জমি এক্ষণে প্রতি বৎসর চাষ হইয়া থাকে।[১]

 ধান্যই এই জেলার প্রধান কৃষিজাত দ্রব্য। পূর্ব্বে এ দেশে তুলা, নীল ও তুঁতের চাষ প্রচুর পরিমাণে হইত। এক সময় এই সকলকৃষিজ দ্রব্য। দ্রব্য বাণিজ্যার্থে এ প্রদেশ হইতে দেশ-দেশন্তরে প্রেরিত হইয়াছে।[২] এক্ষণে নীলের ব্যবসা নাই বলিলেই চলে, তুলার চাষ প্রায় কেহই করে না, তুঁতও পূর্ব্বের তুলনায় সামান্যই উৎপন্ন হইয়া থাকে। এক সময় এতদ্দেশে রেশম-ব্যবসায়েরও যথেষ্ট শ্রীবৃদ্ধি হইয়াছিল। এরূপ গ্রাম ছিল না, যেখানে রেশম-ব্যবসা সম্বন্ধীয় দু’একজন অভিজ্ঞ লোক দৃষ্ট না হইত। এক্ষণে এই ব্যবসাটিও হ্রাস হইয়া গিয়াছে। পূর্ব্বে এতদঞ্চলে কফি ও গোল আলুর চাষ বড় একটা কেহই করিত না। কিন্তু আজকাল ঘাটাল ও তমলুক মহকুমায় কফি ও গোল আলুর চাষ যথেষ্ট পরিমাণে হইতেছে। নারিকেল, সুপারি, আনারস, কদলী প্রভৃতি এই জেলায় প্রচুর পরিমাণে উৎপন্ন হয়। নানা প্রকার সুস্বাদু ও সদ্‌গন্ধযুক্ত পান, সুস্বাদু ও সুবৃহৎ মূলা, সার কচু, মান ও তরমুজের চাষও এই জেলার স্থানে স্থানে হইয়া থাকে।


  1. Final Report of the Midnapore District Settlement by Mr. A. K. Jameson M. A., I. C. 8.
  2. Hunter's Orissa Vol. I. p. 313.