পাতা:মেদিনীপুরের ইতিহাস প্রথম ভাগ.djvu/৬৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪৬
মেদিনীপুরের ইতিহাস।

বিক্রয়ার্থ প্রেরিত হইত। সম্প্রতি বিশ পঁচিশ বৎসর হইল, এই ব্যাবসা এ জেলা হইতে এক প্রকার উঠিয়া যাইতেই বসিয়াছে। কলে প্রস্তুত বিলাতী সিল্কের সহিত প্রতিযোগিতায় দাঁড়াইতে না পারাই এই ব্যাবসালোপের প্রধান কারণ। ১৮৫২ খৃষ্টাব্দে কেশিয়াড়িতে অন্যুন আট নয় শত ঘর তাঁতির বাস ছিল। এক্ষণে পঞ্চাশ ঘরও আছে কি না সন্দেহ। আনন্দপুরও এক সময় বিশেষ বর্দ্ধিষ্ণু গ্রাম বলিয়া অভিহিত হইত। আয়তনে ইহা মেদিনীপুর সহর অপেক্ষাও বড় ছিল। অনেক ধনী মহাজন এই স্থানে বাস করিতেন। ১৭৯৯ খৃষ্টাব্দের চুয়াড়বিদ্রোহের সময় বিদ্রোহীরা এই গ্রামটি দুইবার লুণ্ঠন করিয়া পোড়াইয়া দিয়াছিল।

 ডেবরা থানার অন্তর্গত লোয়াদা গ্রামে উৎকৃষ্ট মিছরী প্রস্তুত হয়। পূর্ব্বে এই স্থানে অনেকগুলি মিছরীর কারখানা ছিল এবং এই স্থানে অনেক সঙ্গতিপন্ন মহাজনও বাস করিতেন। লোয়াদার লোয়াদা।মিছরী অনেক স্থানে বিক্রয়ার্থ প্রেরিত হইত। কিন্তু কয়েক বৎসর হইল, এতদঞ্চলে ভয়ানক ম্যালেরিয়ার প্রাদুর্ভাব হওয়ায় গ্রামবাসী ও ব্যাবসায়িগণ অধিকাংশই দেশত্যাগ করিয়া চলিয়া গিয়াছে। এই কারণে ব্যাবসাটিও দেশ হইতে লোপ পাইতে বসিয়াছে। লোয়াদার সুবৃহৎ অট্টালিকা ও রাস্তাঘাট ক্রমশঃ জঙ্গলাকীর্ণ হইতেছে।

 সবঙ্গ থানার অনেক স্থানে নানা প্রকার উৎকৃষ্ট মাদুর প্রস্তুত হয়। বৎসরে প্রায় চার পাঁচ লক্ষ জোড়া মাদুর এই জেলায় প্রস্তুত হইয়াসবঙ্গ। স্থানান্তরে বিক্রয়ার্থ প্রেরিত হইয়া থাকে। সবঙ্গ থানার মধ্যে চারি পাঁচটি মাদুরের হাট আছে; প্রতি হাটবারে প্রত্যেক হাট হইতেই দেড় হাজার দুই হাজার টাকার