পাতা:মেয়েলি ব্রত ও কথা - পরমেশপ্রসন্ন রায় (১৯০৮).pdf/৭১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
কৃষি-মাহাত্ম্য
৫৭

 ক্ষেত্রব্রত কৃষিজীবিদের কল্যাণ কামনায় উদ্ভাবিত হইয়াছে। কৃষিকর্ম্মের প্রতি কমলার অর্দ্ধ দৃষ্টি চির প্রসিদ্ধ। একমাত্র শস্যের অভাবে পৃথিবীর অন্য সুখ-সম্পদ বিফল। অগ্রহায়ণ মাস হইতে যোষিৎ প্রচলিত বার-ব্রতাদির গণনা আরম্ভ হয়। অগ্রহায়ণেই ব্রত সংখ্যা বেশী। বিবাহিতা কুলকামিনী অগ্রহায়ণে সর্ব্ব প্রথম ক্ষেত্রব্রতে দীক্ষিতা হইলে তাঁহার অন্যান্য গার্হস্থ্য ব্রতে অধিকার লাভ হয়। ইহা অগ্রে না করিয়া অগ্রহায়ণে কর্ত্তব্য অন্যান্য বারব্রতাদি করা নিস্ফল। ক্ষেত্রব্রত যদি কোন বৎসর অগ্রহায়ণের শেষভাগে নিরূপিত হয়, তবে অগ্রহায়ণের অন্যান্য ব্রত মাঘমাসে করিবে। শস্যপ্রাচুর্য্য বশতঃ মাতৃভূমি মার্গশীর্ষে নূতন সৌন্দর্য্যে উদ্ভাসিত, সুতরাং ক্ষেত্র দেবতার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশের এই উপযুক্ত সময়।

 কৃষক নেহাৎ “চাষা” কিম্বা “ভদ্র”? ইহার উত্তরে এখন আর দুই মত হইতে পারে না। কারণ, সম্প্রতি কতিপয় কমলার প্রিয়-পুত্র জমিদার ও বাণী-পুত্র মহামহোপাধ্যায় শাস্ত্রজ্ঞ পণ্ডিত স্বহস্তে একযোগে হলচালনা করিয়া একবাক্যে উক্ত প্রশ্নের সমাধান করিয়া দিয়াছেন। হংস-পুচ্ছ অপেক্ষা লাঙ্গলের গুরুভার দেখিয়া কেহ ভ্রমক্রমে কৃষিকর্ম্মের প্রতি অবজ্ঞা প্রকাশ না করেন, এই জন্যই গজেন্দ্র-বদনের অগ্রপূজার ন্যায়, ক্ষেত্রব্রত সর্ব্বাগ্রে কর্ত্তব্য এইরূপ বিধি প্রবর্ত্তিত হইয়া থাকিবে।

 নূতন ধান্যের প্রস্তুত মুড়ি, মুড়কি, চা’ল ভাজা, ছাতু প্রভৃতি পূজার বিশিষ্ট নৈবেদ্য। একখানি কুলার উপর ছাতু দ্বারা ক্ষেত্র দেবতার মূর্ত্তি রচিত হয়। পুরোহিত ক্ষেত্রপাল দেবতার