পাতা:মোগল-বিদুষী.djvu/২১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
গুল্‌বদন্‌

না পারিয়া কত দুঃখ করিয়াছিলেন। তারপর পিতার মৃত্যু হইল; ক্রমে মাতা মাহম্‌ও সংসার-রঙ্গমঞ্চ হইতে চিরবিদায় গ্রহণ করিলেন। ভ্রাতা ও ভগিনী উভয়েই শোকে মুহ্যমান হইয়াছিলেন সন্দেহ নাই। কিন্তু হুমায়ূন্ গুল্‌কে সান্ত্বনা দিবার জন্য যেন নিজের শোকও বিস্মৃত হইলেন। এত স্নেহ, এত সহানুভূতি কি এ সংসারে সত্যসত্যই দুর্ল্লভ নহে? সুতরাং হুমায়ূন্ বৈমাত্রেয় ভ্রাতা হইয়াও যে গুলের নিকট সহোদর অপেক্ষা প্রিয়তর হইবেন, আশ্চর্য্য কি?

 যাহা হউক, মাহম্ সংসারপাশ হইতে মুক্ত হইয়া বাঁচিলেন। রাজ্যের চতুর্দ্দিকে এতদিন যে বিদ্রোহের বহ্নি ধূমায়িত হইতেছিল, তাহা দেখিতে দেখিতে করাল লেলিহান রসনা বিস্তার করিয়া, বাদ্‌শাহ্-পরিবারকে গ্রাস করিতে উদ্যত হইল।

 প্রধানতঃ পাঠানগণকে নিপীড়িত ও পরাজিত করিয়াই মোগল-কুলগৌরব বাবর হিন্দুস্থানে মোগল-রাজত্বের ভিত্তি স্থাপন করেন। সুতরাং বিজিত পাঠানেরা যে মোগলের পরম শত্রুরূপে উপযুক্ত সুযোগের প্রতীক্ষায় দিন গণিতে থাকিবে, তাহার আর বৈচিত্র্য কি? হুমায়ূনের শাসন-শৈথিল্য অচিরে তাহাদের সেই অভিলষিত সুযোগ উপস্থিত করিল।

 পূর্ব্বাঞ্চলে মগধে মহাশক্তিধর চতুরচূড়ামণি শের খাঁ বিক্ষিপ্ত পাঠানগণকে কেন্দ্রীভূত করিয়া আবার ভাগ্যপরীক্ষার জন্য প্রস্তুত হইলেন। তিনি পূর্ব্বেই চুনারের দুর্গ হস্তগত করিয়া বিহারের অধিকার দৃঢ়তর করিয়া তুলিয়াছিলেন। শেরের উত্তরোত্তর

১৫