পাতা:মোগল-বিদুষী.djvu/৩৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
মোগল-বিদুষী

ত্যাগ করিবে না, হিন্দালের নিকট এই প্রতিশ্রুতি লইয়া তাহাকে কাবুলে তাহার মাতার নিকট পাঠাইয়া দিলেন। এই সময় কাবুলে (১৫৪৩) হিন্দালের সহিত গুল্‌বদনের সাক্ষাৎ ঘটে। ইহা হইতে অনুমান হয়, গুল্‌বদন্‌ তখন কাবুলে কামরানের অন্তঃপুরবাসিনী; রাজ্যভ্রষ্ট প্রিয়ভ্রাতা হুমায়ূনের দুর্দ্দৈবে ব্যথিত চিত্তকে জননী-সেবায় ও পুত্রকন্যাপালনে সান্ত্বনাদান করিতেছেন।

 হুমায়ূন্ হৃতরাজলক্ষ্মী পুনরুদ্ধারের উপায় চিন্তা করিতে লাগিলেন। কিন্তু বিরল-সুহৃদ্ ভারতবর্ষ হইতে কি উপায় হইবে? স্থির হইল, তিনি এই দুর্দ্দিনে সাহায্যলাভের আশায় পারস্য-সম্রাট্ শাহ্, তহ্‌মাস্পের শরণাগত হইবেন।

 পারস্য-গমনের সঙ্কল্প স্থির রাখিয়া হুমায়ূন্ কোয়েটার সন্নিকটে শাল্ মসতং পর্য্যন্ত অগ্রসর হইলে, হঠাৎ সংবাদ পাইলেন তাঁহার বৈমাত্রেয় ভ্রাতা অস্করী তাঁহাকে বন্দী করিবার দুরভিসন্ধিতে দুই সহস্র অশ্বারোহী সেনা লইয়া ধাবিত হইয়াছেন। অনন্যোপায় হুমায়ূন্ পলায়নের সঙ্কল্প করিলেন; কিন্তু সঙ্গে হামীদা ও এক বৎসরের শিশু আক্‌বর। ইহাদের লইয়া পলাইবার জন্য দ্বিতীয় অশ্বও তাঁহার ছিল না। সম্রাট্ একটি অশ্বের জন্য তর্দ্দী বেগের নিকট নিষ্ফল প্রার্থনা করিয়া অবশেষে হামীদাকে নিজ অশ্বে তুলিয়া লইয়া পলায়ন করিলেন। রৌদ্রের উত্তাপে এক বৎসরের শিশুকে সঙ্গে লওয়া নিরাপদ বিবেচিত হইল না। ‘হুমায়ূন্-নামায়’ গুল্‌বদন্ লিখিয়াছেন, পলায়নের ত্রস্ততায় শিশুপুত্র পরিত্যক্ত হইয়াছিল। অস্করী আসিয়া দেখিলেন, পিঞ্জর শূন্য। ভ্রাতৃবৈরী

৩০